সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শীতকাল মানেই পিঠে ব্যাগ নিয়ে, নরম রোদ্দুর গায়ে মেখে পাড়ি দেওয়া দূর থেকে সুদূরে। ঘর থেকে দু'পা দূরত্বের কোনও পর্যটনকেন্দ্র হোক কিংবা দূরবর্তী কোনও অজানা জায়গা, শীতকাল তো ঘুরে বেড়ানোর আদর্শ সময়। ভ্রমণপ্রেমীরা তাই সারাবছরের ট্যুর প্ল্যানে এই সময়টাকে বেছে নেন সবচেয়ে সুন্দর জায়গাটি ঘোরার জন্য। আসলে ভারত এমন এক দেশ, যার প্রতি প্রান্তই অন্য রূপ নিয়ে হাজির হয় আপনার সামনে। ভারতের 'সুইজারল্যান্ড' কাশ্মীরের কথা তো আপনারা জানেন। কিন্তু জানেন কি ভারতেই রয়েছে নরওয়ে? চমকে উঠছেন কিংবা সন্দেহ প্রকাশ করছেন? এই প্রতিবেদন পড়লে আর কোনও সংশয় থাকবে না। আসুন, আসমুদ্র হিমাচলের মাঝে মেরুদেশের সেই দেশটির খোঁজ দিই আপনাকে।
সুমেরু প্রদেশের অন্তর্গত এক অদ্ভুত দেশ নরওয়ে। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশটির যেমন সৌন্দর্যে, তেমনই শান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্য পর্যটকদের অতি প্রিয়। এখানকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হল এদেশটি পৃথিবীর সাপেক্ষে এমন একটি অবস্থানে রয়েছে, যে বছরের ৬ মাস এখানে সূর্যের আলো পড়ে না। ফলে বছরের মধ্যে ৬ মাস দিন ও ৬ মাস রাত। আরেক চমক হল এদেশ থেকে দেখা যায় দুর্দান্ত সুমেরুপ্রভা - অরোরা বোরিয়ালিস।
স্কি-র জন্য আদর্শ হিমাচলের নারকান্ডা।
ভারতে নরওয়েতে যদিও অরোরা বোরিয়ালিস এবং বছরের ৬ মাস করে দিন-রাত্রি মতো ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য নেই, কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নিরিখে এদেশের দুই জায়গা একচুলও পিছিয়ে নেই। প্রথম জায়গা হল হিমাচল প্রদেশের নারকান্ডা। বরফঢাকা তুষারশুভ্র পাহাড়ি ঢাল স্কি করার পক্ষে একেবারে আদর্শ। তাই শুধু পর্যটক নয়, অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস প্রেমীদেরও অন্যতম পছন্দের জায়গা এই নারকান্ডা। আর শীতে এখানকার উপত্যকাগুলোয় স্কিয়ারদের ভিড় চোখে পড়ে। তার রোমাঞ্চ এতটাই যে সাধারণ মানুষজনও পায়ে চাকা লাগিয়ে বরফের মধ্যে একটু ঘুরে নেন।
সৌন্দর্যের কথা তো জানলেন। এবার ঠিকানাটা ভালো করে জেনে নিন। হিমাচলের বহুল পরিচিত পর্যটনস্থান শিমলা। সেখানেই রয়েছে এদেশের 'নরওয়ে' নারকান্ডা। হিন্দুস্তান-টিবেট রোড বরাবর ২৭০৮ মিটার উপরে অবস্থিত এই উপত্যকা। শিমলা ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে অবশ্যই একটা দিন রাখুন নারকান্ডা ঘোরার জন্য।
অরুণাচলের দিবাং ভ্যালি।
নরওয়ের সৌন্দর্যের সঙ্গে তুলনীয় আরেক জায়গায় রয়েছে উত্তরপূর্বের অরুণাচল প্রদেশের দিবাং ভ্যালি। এমনিতেই উত্তরপূর্ব ছবির মতো সুন্দর। যাকে বলে - পিকচার পারফেক্ট। সেই অরুণাচলেই দিবাং ভ্যালি। সবুজে ভরা মিশমি উপত্যকার বিশেষত্ব প্রাচীনত্বের ছোঁয়া আর মিশমি টাকিন প্রজাতির বাইসন। এখানে নরওয়ের মতো অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের সুযোগ অবশ্য নেই। কিন্তু একটুকরো খাঁটি প্রকৃতি আছে। পাবেন প্রচুর ওষধি গাছ। এছাড়া জীববৈচিত্র্যের কারণে বিখ্যাত এই উপত্যকা। সব জেনেই তো নিলেন। আর কী? এবার ব্যাগ গুছিয়ে টিকিট কেটে ফেলুন।
