সুনীপা চক্রবর্তী, ঝাড়গ্রাম: শাল গাছ কাটার প্রতিবাদে আদিবাসী কুড়মি সমাজের পথ অবরোধের জেরে বিপাকে পড়লেন সাংসদও। শনিবার বেলার দিকে ঝাড়গ্রামের (Jhargram) শিলদায় গাছ বাঁচানোর দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেন আদিবাসীরা। এর জেরে ঝাড়গ্রাম-বেলপাহাড়ি-বাঁকুড়া সংযোগকারী রাস্তায় সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এমনকী ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে আটকে দেওয়া হয় স্থানীয় সাংসদের গাড়িও। বাধা পেয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যেতে হল ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ (BJP MP) কুনার হেমব্রমকে।
ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান-সহ আদিবাসী কুড়মি সমাজের যে কোনও পবিত্র প্রয়োজন এই শাল গাছ। এর আগে বনদপ্তরের কর্মীরা সেই শাল গাছ কাটতে গেলে তাঁদের বাধা দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক পর শনিবার ফের বনদপ্তরের তরফে বেলপাহাড়ির এঠেলায় শাল জঙ্গল কাটা শুরু হয়। আর তাতেই রাস্তায় নেমে অবরোধে শামিল হন আদিবাসী কুড়মি সমাজের সদস্যরা। অভিযোগ, চলতি মাসের ১০ তারিখ এঠেলার শাল জঙ্গল কাটার জন্য বন সুরক্ষা কমিটিকে নির্দেশ দেয় বনদপ্তর। ওই দিন জঙ্গল কাটার সময় আদিবাসী কুড়মি সমাজের মানুষজনেরা বাধা দিয়ে শাল গাছ বন্ধ করেছিলেন। ওই সময় শিলদা রেঞ্জের রেঞ্জার বিষয়টি নিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এমনই দাবি আদিবাসী কুড়মি সমাজের।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল-বিজেপির অশান্তিতে রণক্ষেত্র বালি, গুলিবিদ্ধ গেরুয়া শিবিরের এক কর্মী]
কিন্তু ডিএফও’র সঙ্গে আদিবাসীদের কোনও আলোচনা ছাড়াই শনিবার ফের শাল জঙ্গল কাটতে যান বনদপ্তরের কর্মীরা। এরপরেই প্রতিবাদে পথ অবরোধ শুরু করেন আদিবাসী কুড়মি সমাজের কয়েকশো মানুষ। তাঁদের দাবি, শাল গাছ তাঁদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র। এই গাছ দেবতাজ্ঞানে পূজা করেন তাঁরা। তাই কোনওভাবে শাল বৃক্ষ ছেদন করা যাবে না। এদিকে, দীর্ঘ সময় পথ অবরোধের জেরে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। শিলদার নিমতলার চকে পথ অবরোধে ঝাড়গ্রাম-বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম-বেলপাহাড়ি সংযোগকারী রাস্তায় যান চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: শাহ-সফরেই গেরুয়া শিবিরে যোগ দিতে পারেন আরও ১০ জনপ্রতিনিধি, তৈরি তালিকা]
এই বিষয়ে আদিবাসী কুড়মি সমাজের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি অনুপ মাহাতো বলেন, “ শালগাছ আমাদের কাছে দেবতা। ধর্মীয় আচার,অনুষ্ঠান-সহ যে কোনও পবিত্র কাজে শাল গাছ প্রয়োজন হয়। প্রকৃতির এই দানকে কোনওভাবে ছেদন করা যাবে না। আমরা এর আগে একদিন শাল গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আজ আবার শাল গাছ কাটতে এলে আমারা পথ অবরোধ করেছি। আমাদের দাবি না মানা হলে আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।” ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম বাধার মুখে পড়েও শাল গাছ বাঁচানো নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তিনি শুধু জানান, “শিলদায় অবরোধ চলছিল। আমি ওই দিকে যাচ্ছিলাম। বাধা পেয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যাই।”