সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “হত্যাকারীদের শাস্তি দিলেই শুধু সমস্যার সমাধান হবে না। জনগণকে সচেতন করা দরকার। কেরলে বহুদিন থেকেই কুকুর, বিড়াল, হাতিদের উপর অকথ্য অত্যাচার হয়ে আসছে। সেদিকে নজর দিন দয়া করে”, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি লিখলেন বাংলার তৃণমূল সাংসদ মিমি চক্রবর্তী।
কেরলে গর্ভবর্তী হাতির মৃত্যু নিয়ে যখন সারা দেশ উত্তাল, পশুপ্রেমী সাংসদ মিমি চক্রবর্তীও সরব হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ইস্যু নিয়ে তিনি এবার কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের উদ্দেশে খোলা চিঠি লিখলেন।
মিমি চক্রবর্তী লিখেছেন, “বিস্ফোরকে ঠাসা আনারস খেয়ে কেরলের পালাক্কর জেলায় যে গর্ভবতী হাতির মৃত্যু হয়েছে, সেই ঘটনায় দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের মতো আমিও মর্মাহত। ভারতীয় নাগরিক এবং একজন পশুপ্রেমী হিসেবে লজ্জায় আমার মাথা হেঁট হয়ে যাচ্ছে। যদিও আমি জানি কেরল সরকার এই নিন্দনীয় ঘটনায় বিরুদ্ধে যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেবেন। গতমাসেও একটি হাতির উপর অকথ্য অত্যাচার হয়ে চোয়াল ভেঙে তার মৃত্যু হয়েছে। কেরলে দীর্ঘদিন ধরেই এমন ঘটনা ঘটছে।”
“কেবল হাতি না, পথের কুকুর-বিড়ালদেরকেও একইভাবে নির্মমতার সঙ্গে হত্যা করা হচ্ছে ওই অঞ্চলে। কুকুরদের পিটিয়ে খুন করা হয়, বিড়ালকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মেরে ফেলা হয়। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে মন্দিরে হাতিদের বেঁধে রাখার একটা চলও রয়েছে। তাই শুধুমাত্র এই গর্ভবতী হাতির হত্যাকারীদের সাজা দিলেই সমস্যা মিটবে না! প্রয়োজন গ্রামবাসীদের মধ্যে যথাযথ সচেতনা বৃদ্ধি করা”, মত মিমির।
সাংসদের কথায়, “১৯৬০ সালের পশু সুরক্ষা আইন এবং ১৯৭২ সালের ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্টের পরও যখন বন্যপ্রাণীদের উপর এই নির্মমতার পরিসংখ্যান হ্রাস করা যায়নি, তখন জনগণকে আরও সচেতন করে তোলা উচিত। যেসব অঞ্চলে বন্যপ্রাণীদের প্রতি এই রকম নির্মমতা হচ্ছে, সেখানে সবার আগে উচিত মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন করার চেষ্টা করা। প্রয়োজন হলে তাঁদের সঠিক ভাবে বোঝাতে হবে।” শিশুদের পাঠ্যবইতে ‘নেচার স্টাডি’ বিষয়টির সংযোজনের কথাও নিজের খোলা চিঠিতে লেখেন তৃণমূল সাংসদ এবং অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী।
[আরও পড়ুন: দেব সহায়, নেপাল থেকে দেশে ফিরলেন দুই অন্তঃসত্ত্বা-সহ ৩৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক]
ফসল রক্ষার্থে বন্যপ্রাণীদের খাদ্যের মধ্যে অনেকদিন ধরেই বিস্ফোরক মিশিয়ে তাদের দূরে রাখার প্রথা চলছে কেরলে। তাই তাদের কাছে হয়তো বিষয়টি খুব একটা বেদনাদায়ক না। কিন্তু পশুদের থেকে ফসল রক্ষা করতে তো আরও অনেক উপায়ই অবলম্বন করা যায়। কেরালা সরকারের উচিত সবার আগে চাষের জমি এবং বনাঞ্চলের মধ্যে পোক্ত বেড়া বা পরিখার ব্যবস্থা করা। তাতে করে এই ধরনের ঘটনা থেকে কিছুটা হলেও অব্যাহতি পাওয়া যেতে পারে, বলেই দাবি করেছেন পশুপ্রেমী সাংসদ মিমি চক্রবর্তী।
উল্লেখ্য, লোকসভা অধিবেশনেও তিনি এর আগে দেশের পশু সুরক্ষা আইনকে আরও জোরদার করার প্রস্তাব রেখেছিলেন। লকডাউনের সময়ে নিজে লোক পাঠিয়ে রাস্তার কুকুর-বিড়ালদের খাইয়েওছেন। এবার দেশে পশুদের প্রতি হওয়া নির্মম অত্যাচারের বিরুদ্ধে চিঠি লিখলেন প্রকাশ জাভড়েকরকে।
[আরও পড়ুন: ঋত্বিক চক্রবর্তীর নাম করে টলিউডে ভুয়ো কাস্টিংয়ের ফাঁদ! জানতেনই না অভিনেতা]
The post ‘হাতির খুনিদের শাস্তি দিলেই হবে না, জনসচেতনতা বাড়ান’, কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি মিমির appeared first on Sangbad Pratidin.