ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা না হলে বোলপুরের (Bolpur) আলাপিনী মহিলা সমিতি বিশ্বভারতীর নির্দেশ মেনে নতুন বাড়ি ছাড়তে নারাজ। এর প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে ফের আনন্দ পাঠশালার সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসলেন সমিতির সদস্যরা। যদিও কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ৪ তারিখের মধ্যে সমিতিকে নতুন বাড়ি ছাড়তে হবে। এ নিয়ে আলাপিনী সমিতির সদস্যরা উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান। এদিকে, সমিতি আন্দোলনে নামতেই, সমান্তরাল আলাপিনী সমিতি তৈরির উদ্যোগ নিল বিশ্বভারতী। সেখানে বিশ্বভারতীর কর্মীদের স্ত্রী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা থাকবেন।
লিজ দেওয়া বিভিন্ন জায়গা-জমি পুনরুদ্ধারে নেমেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে নানা সমস্যা, জটিলতাও দেখা গিয়েছে। তার মধ্যেই অন্যতম এই আলাপিনী সমিতির নতুন বাড়ির দখল নেওয়া। সমিতির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati)উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তাঁদের সঙ্গে কোনও বৈঠকে বসছেন বা কথা বলছেন না। শুধু বারবার নোটিস পাঠিয়ে নতুন বাড়ি ছাড়তে বলছেন। গত ৬৪ বছর ধরে আলাপিনী সমিতি এই ভবন থেকেই নানা সমাজসেবামূলক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকী তাঁরা এই ভবনটি ভাড়া নিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু উপাচার্য যা ভাড়া বলছেন, তা তাঁদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন আলাপিনী সমিতির সদস্যরা।
[আরও পডুন: শুভেন্দুর সভার পরই রণক্ষেত্র কাঁথি, বিজেপির মহিলা কর্মীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ]
এই পরিস্থিতিতে আবার আলাপিনী সমিতির সম্পাদিকা জয়তী ঘোষকে আক্রমণ করে বিভিন্ন অভিযোগ করা হয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে। যা ভিত্তিহীন বলে পালটা দাবি সমিতির। বলা হচ্ছে, আলাপিনী তাদের লক্ষ্য থেকে সরে গিয়েছে। সংগঠন দু-একজনের কথায় চলছে। এ নিয়ে সমিতির সভাপতি অপর্ণা দাস মহাপাত্র বলেন, ”বিশ্বভারতী ৩১ ডিসেম্বরের পর এবার ৪ জানুয়ারির মধ্যে ঘর ছাড়তে বলেছে। সমিতি সমাজ সেবামূলক কাজ করে থাকে সারা বছর। বিশ্বভারতী আমাদের বিকল্প কোনও ঘর দেওয়ার কথা বলেনি। দিলে ভাল হয়। সবার সম্মতি নিয়ে সমিতি চলে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আমাদের কেন আক্রমণ করছে, তা বুঝতে পারছি না।”
[আরও পডুন: ‘তৃণমূল কর্মীদের স্রেফ ব্যবহার করছেন নেতারা, সতর্ক হোন’, ফের বেফাঁস রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়]
এদিকে আশ্রমিক, প্রাক্তনী, অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী, রবীন্দ্রপ্রেমী মানুষজন আলাপিনীর সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। পালটা চাপ দিতে বিশ্বভারতী নিজেদের কর্মীদের নিয়ে সমান্তরাল আলাপিনী সমিতি তৈরি করছে। সবমিলিয়ে, বিশ্বভারতী বনাম আলাপিনী সমিতির লড়াই আরও তীব্র হচ্ছে বলেই মনে করছেন বোলপুরের সাধারণ মানুষজন।