shono
Advertisement

কেন চিন্তা বাড়াচ্ছে কোভিড পরবর্তী নিউমোনিয়া? জানুন চিকিৎসকদের মত

করোনা পরবর্তী নিউমোনিয়ায় প্রাণ গেল কলকাতার দুই চিকিৎসকের।
Posted: 11:43 AM Jan 20, 2021Updated: 11:43 AM Jan 20, 2021

অভিরূপ দাস: ভাইরাসমুক্তি আদতে রোগমুক্তি নয়। করোনা সেরে যাওয়ার পরেও জবাব দিচ্ছে ফুসফুস। করোনা-পরবর্তী নিউমোনিয়ায় (Pneumonias) প্রাণহানি ঘটছে আকছার। এমন অসুখে অকালেই চলে গেলেন দুই চিকিৎসক, প্রতীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও যাদব চট্টোপাধ্যায়। করোনা-পরবর্তী ফুসফুসের দুর্বলতা কাটাতে পারলেন না শহরের দুই সেবাব্রতী।

Advertisement

প্রখ্যাত হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক ডা. প্রতীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এক মাস আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেরেও উঠেছিলেন। সম্প্রতি বেলভিউ হাসপাতালে মারা যান তিনি। হাসপাতালের সিইও প্রদীপ ট্যান্ডন জানিয়েছেন, “কোভিড সেরে গিয়েছিল প্রতীপবাবুর। কিন্তু ফুসফুসকে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছিল ভাইরাস। শীতের খামখেয়ালি আবহাওয়ায় ফুসফুসের আপার ট্র‌্যাকে সংক্রমণ হয়। সেখান থেকে নিউমোনিয়া। বেলভিউয়ে যখন আসেন ফুসফুসের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গিন। দম নিতে পারছিলেন না। একমো সাপোর্টের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু একমোতে দেওয়ার আগেই মৃত্যু হয় প্রখ্যাত চিকিৎসকের।”

[আরও পড়ুন: ‘দালালি বন্ধ করুন’, কাঁথি থানায় ঢুকে আইসিকে ‘ধমক’ অখিলপুত্র সুপ্রকাশ গিরির]

একইভাবে দীর্ঘদিন করোনায় ভুগে প্রাণ হারালেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. যাদব চট্টোপাধ্যায়। করোনা আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ একমাস বাইপাসের ধারে বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি। ৩৭ দিন আগে করোনা আক্রান্ত হন ডা. চট্টোপাধ্যায়। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রথম সাতদিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেই ভরতি ছিলেন। এরপর পরিবারের লোকেরা তাঁকে মেডিকা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই একমো সাপোর্টে ছিলেন চিকিৎসক। এক্সট্রা কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন থেকে আর বেরনো হল না অ্যানাটমির বিভাগীয় প্রধানের। সুপার জানিয়েছেন, ফুসফুস কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। একমো ব্যবহার করে শরীরে রক্তচলাচল স্বাভাবিক রাখা হচ্ছিল। শেষরক্ষা হল না।

কেন কোভিড-পরবর্তী নিউমোনিয়া এত মারাত্মক? ফুসফুসের বাইরের দিকে এপিথেলিয়াল কোষের গায়ে লোমশ অংশে মিউকাসের মতো আঠালো পদার্থ তৈরি করছে করোনা। সহজে তাকে ছাড়ানো যাচ্ছে না। ফুসফুসরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “ফুসফুসকে দুর্বল করে দিচ্ছে করোনা। করোনা থেকে সেরে উঠে অনেকেই বিধিনিষেধ মানছেন না। এই দুর্বল ফুসফুসে বাসা বাঁধছে নিউমোনিয়া।” ডা. গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “ফুসফুস আদতে স্পঞ্জের মতো। কোষগুলো হাওয়া দিয়ে ভরতি থাকে। গ্যাসভরতি বেলুনের মতো এই ফুসফুস কোভিড-পরবর্তী নিউমোনিয়ায় কঠিন হয়ে যায়।” ধীমান গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “শীতের মরশুমে আচমকাই মাঝে দু’একদিন তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। যাঁরা কোভিড থেকে সেরে উঠেছেন তাঁদের ফুসফুস এখনও দুর্বল। এমন আবহাওয়ায় ফুসফুসের উপরের ট্র্যাকে যখন তখন সংক্রমণ হতে পারে।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement