অভিষেক চৌধুরী, কালনা: গারদেই পরিচয়! তারপরেই গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব, প্রেম। আর সেই প্রেম পরিণতি পায় বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্য দিয়ে। বুধবার বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা সেই দুই বন্দির চারহাত এক হওয়া যেন এক রূপকথার গল্প। আর সেই গল্পের নায়ক অসমের যুবক আবদুল হাসিম ও নায়িকা বীরভূমের শাহানারা খাতুন। মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে বিয়ে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার দায়িত্বে ছিল মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি।
অসমের দোরাং জেলার দলগাঁও থানা এলাকার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামের বাসিন্দা আবদুল হাসিম। অন্যদিকে বীরভূম জেলার নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা শাহানারা খাতুন। ধর্ষণের মামলায় আবদুল ৮ বছর ও খুনের মামলায় শাহানারা ৬ বছর ধরে সংশোধনাগারে বন্দি অবস্থায় রয়েছে। সংশোধনাগারে থাকাকালীন তাদের পরিচয়, বন্ধুত্ব, প্রেম ও শেষ পর্যন্ত বিয়ে।
[আরও পড়ুন: শপিং মলের চলন্ত সিঁড়িতে আটকে গেল শিশুর হাত! হাওড়ায় তীব্র চাঞ্চল্য]
বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা এই দুই বন্দি জানান, গত তিন বছর আগে তাদের দুজনের পরিচয় হয়। গড়ে ওঠে বন্ধুত্ব। একে অপরের প্রেমেও পড়ে যান। এরপর তারা বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হতে চান। দুই পরিবারের সদস্যরা জানতে পেরে তাতে সম্মতিও দেন। এরপরেই তারা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেন হাসিমের বাবা আবদুস সাত্তার। বিয়ের অনুমতি দেওয়ার জন্য গত ১৬ জুন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির দ্বারস্থ হন। আবেদন মঞ্জুর হতেই চার হাত এক করার আয়োজন শুরু হয়।
মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে আইনিভাবে তারা বিবাহ সূত্রে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য সুখের সন্ধানে এদিন তারা বীরভূমের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। তারা জানান, “আমরা এখন মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছি। কারণ জেলের বাইরে বেরিয়ে নতুন এক সংসার পাতব।” মানবাধিকার সংগঠনের অন্যতম এক কর্তা শামসুদ্দিন শেখ জানান, “আবদুল ধর্ষণের মামলা ও শাহানারা খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছে। দুজনেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিল। তাই তাদের পরিবার কারামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়। তারা প্যারোলে মুক্তি পায়। এদিন তারা আইনি বিবাহ সারেন। আগামী ১৬ জুলাই তারা ফের সংশোধনাগারে ফিরে যাবে।”