টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: নতুন জেলা সভাপতিকে পছন্দ না হওয়ায় প্রতিবাদ স্বরূপ প্রথমে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, তারপর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি। আর এবার দলের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়ালেন বাঁকুড়ার দুই ‘বিক্ষুব্ধ’ বিজেপি (BJP) বিধায়ক। ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা এবং ইন্দাসের নির্মলকুমার ধাড়া এবার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়তে চেয়ে দলকে চিঠি পাঠালেন। কেন ছাড়তে চান, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও উত্তর অবশ্য মেলেনি। ওন্দার বিধায়কের সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া – এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু বাঁকুড়ার (Bankura) রাজনৈতিক মহলে জোর গুজব, এবার হয়ত বিজেপি ছাড়বেন এই দুই বিধায়ক। তৃণমূলে যোগদান নিয়েও চলছে তুমুল আলোচনা।
তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগে ২০২১ সালেও একবার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা (Security) ছাড়তে চেয়েছিলেন বাঁকুড়ার গেরুয়া শিবিরের কয়েকজন বিধায়ক। এই তালিকায় ছিলেন শালতোড়ার বহু বিতর্কে জড়ানো বিধায়ক চন্দনা বাউড়িও। সেসময় আর্থিক সমস্যার কথা তাঁরা জানিয়েছিলেন। তবে এবারের বিষয়টি তার চেয়ে বেশ খানিকটা আলাদা, তা সাম্প্রতিক পরিস্থিতি সাপেক্ষে সহজেই অনুমান করা যায়। বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতির বদল চেয়ে অমিত শাহ (Amit Shah)-জে পি নাড্ডাকে (JP Nadda) চিঠি পাঠিয়েছেন ওন্দা, ইন্দাসের বিধায়ক-সহ মোট চারজন। আর তারপরই দলের কাছে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছাড়তে চেয়ে আবেদন জানালেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, এভাবেই ধাপে ধাপে দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়াচ্ছেন বাঁকুড়ার ‘বিক্ষুব্ধ’ বিজেপি বিধায়করা।
[আরও পড়ুন: দুয়ারে স্কুল! মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বাড়ি গিয়েই পড়াচ্ছেন শিক্ষকরা]
যদিও বিষয়টি নিয়ে সেভাবে মুখ খুলতে চাননি ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা। সম্প্রতি দলীয় নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ উগরে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে জানান, ”আলাদা করে কোনও ক্ষোভ নেই। যা নিয়ে আপত্তি, তা যেখানে জানানোর, সেখানেই জানিয়েছি। আর নিরাপত্তা ছাড়ার বিষয়টি আমার ব্যক্তিগত।” ইন্দাসের বিধায়ক নির্মলকুমার ধাড়া কোনও প্রতিক্রিয়াই দিতে চাননি।
তবে বিধায়করা যাই বলুন, জেলার রাজনৈতিক শিবিরে কিন্তু তাঁদের নিয়ে জোর চর্চা চলছে। অভিজ্ঞ মহলের একাংশের অনুমান, বিজেপির পুরনো কর্মী হিসেবে আচমকা দায়িত্ব থেকে বাদ পড়ায় ক্ষোভ, অভিমান হওয়াই স্বাভাবিক এই বিধায়কদের। দলের কাছ থেকে এমন এক ধাক্কা খাওয়ার পর তাঁরা দলত্যাগের পথে হাঁটলে, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। পরবর্তীতে ‘বিক্ষুব্ধ’রা ঘাসফুল শিবিরে যোগ দিলে, তাতে তৃণমূলেরই লাভ।