ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রাসাদোপম বাড়ির আড়ালে মাদকের রমরমা কারবার, কাটোয়া থেকে ধৃত প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর সঙ্গে এবার মণিপুর (Manipur) যোগ পেলেন তদন্তকারীরা। নারায়ণপুরের ফ্ল্যাট থেকে রবিবার ভোরে আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ (STF)। তাদের আদি বাড়ি মণিপুরে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর বাড়িতে চলা হেরোইন তৈরির ইউনিটেরই সদস্য এই ২ জন। ধৃতদের নাম সাজিদ হাসান এবং সমরজিৎ সিং। এদের বাড়ি মণিপুরে। দমদমের কাছে নারায়ণপুর (Narayanpur) এলাকায় একটি ফ্ল্যাটে তারা থাকত। এদের মাধ্যমেই কাটোয়া থেকে কলকাতায় হেরোইন পাচার হত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে এসটিএফ। এই মাদক কাণ্ডে জড়িত ধৃত মোট ৬ জনকে আজ পেশ করা হবে আদালতে।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার কাটোয়ার (Katwa) রাজুয়া গ্রামে হানা দিয়ে চোখ একেবারে কপালে উঠেছিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফের দুঁদে গোয়েন্দাদের। গ্রামের নির্জন জায়গায় বিলাসবহুল বাড়ির আড়ালে এ তো একেবারে মাদকের ভাণ্ডার। বাড়ির মালিক প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী গোলাম মুর্শেদ। কয়েক বছর আগে অবসরের পর এখানে বাড়িটি তৈরি করে মুর্শেদ। তাকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। তার সঙ্গে আরও তিনজন – আঙুর আলি, মিনারুল শেখ ও মিঠুন শেখকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে আঙুর আলি ও মিনারুলের বাড়ি নদিয়ায়।
[আরও পড়ুন: কোভিড টিকাকরণে ২০০ কোটির গণ্ডি পেরল ভারত, ‘অনন্য নজির’, প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর]
শনিবার এদের গ্রেপ্তার করার পর বাড়ি থেকে মোট ৯.৭ কেজি মরফিন উদ্ধার করে এসটিএফ। এই মরফিন শুকিয়েই হেরোইন তৈরি করে তা সরবরাহ করত গোলাম মুর্শেদ ও সহকারীরা। গোটা কারবারই চলত বেআইনিভাবে। এদিন ধৃতদের গ্রেপ্তার করে এই মাদক চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। জেরার মুখে পড়ে তারা অনেক তথ্যই কবুল করেছে বলে দাবি এসটিএফের। সেই সূত্রেই রবিবার ভোরে এসটিএফ নারায়ণপুরের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে সাজিদ ও সমরজিৎকে গ্রেপ্তার করে।
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে ভগিনী নিবেদিতার সঙ্গে তুলনা, বাগদার TMC বিধায়কের মন্তব্যে বিতর্ক]
এসটিএফ সূত্রে খবর, এই দু’জন নারায়ণপুরের যে ফ্ল্যাটে থাকত, সেটি প্রাক্তন নৌসেনা কর্মী গোলাম মুর্শেদের ভাইয়ের। এখন মুর্শেদের ভাইও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনও তার কোনও প্রমাণ হাতে আসেনি তদন্তকারীদের। মুর্শেদের ভাইয়ের উপর নজর রাখা হচ্ছে। সূত্রের আরও খবর, আজ ৬ জনকে একসঙ্গে আদালতে পেশ করা হবে। ১৪ দিনের জন্য তাদের নিজেদের হেফাজতে চাইবে এসটিএফ।