ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: মদ্যপান ঘিরে সামান্য কথা কাটাকাটির জের। তাতেই যুবকের জিভ কেটে (Tongue cut) নেওয়ার মতো চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল দুই মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনায় শান্তিনিকেতনের (Santiniketan) ফুলডাঙা গ্রামের আদিবাসী পাড়ায় শোরগোল। এহেন কুকর্মের পিছনে তন্ত্রসাধনার একটি তত্ত্ব উঠে আসছে। যে দুই মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের পালটা দাবি, এমন কোনও ঘটনা তারা ঘটাননি। তবে মদ্যপান নিয়ে যুবকের সঙ্গে যে বচসা হয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন। ঘটনার তদন্তে নেমে শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ অভিযুক্ত এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। শান্তিনিকেতন থানার অন্তর্গত ফুলডাঙা গ্রামের আদিবাসী পাড়ার বাসিন্দা শমাই সরেনের বয়স ২০ বছর। সোমবার রাত আটটা নাগাদ শমাই সরেন ও তাঁর বন্ধু মকুল প্রতিবেশী পাকু টুডু নামে এক প্রৌঢ়ার বাড়িতে মদ্যপান করতে গিয়েছিলেন। কোনও একটি বিষয় নিয়ে পাকু টুডুর সঙ্গে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। এরপর মকুল শৌচালয়ে যাওয়ার জন্য শমাইয়ের পাশ থেকে উঠে যান। তাঁর অভিযোগ, ফিরে এসেই তিনি দেখেন, শমাই সরেনের জিভ কাটছে পাকু টুডু এবং আরেকজন মহিলা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান বন্ধু মকুল।
[আরও পড়ুন: চণ্ডীতলায় ৩ জনের হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযুক্তের মৃত্যু, রেললাইনের ধারে উদ্ধার খণ্ডবিখণ্ড দেহ]
হাসপাতাল থেকে শমাই সরেনের চিকিৎসার জন্য বর্ধমানে এবং সেখান থেকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা করানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই শমাইয়ের পরিবারের। তাই ছেলেকে বাড়ি নিয়ে চলে আসেন আত্মীয়রা। এরপর বন্ধুরা মিলে অর্থ সংগ্রহের কাজে নামেন। এই ঘটনার পিছনে তাঁরা পাকু টুডুর তন্ত্রসাধনার প্রবৃত্তিকে দায়ী করছে। তাঁদের অভিযোগ, ”আদিবাসী ওই প্রৌঢ় তন্ত্রসাধনা করে। তার জন্যই জিভ কেটেছে। ছেলেটির পরিবার খুব অভাবী। চিকিৎসা করানোর টাকা নেই। তাই আমরা অর্থ জোগাড় করছি। যে ২ মহিলা এমন কাজ করেছে, তাদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি। এই ঘটনায় আমাদের গোটা গ্রাম খুব আতঙ্কিত।”
[আরও পড়ুন: নিজের দপ্তরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সভাপতি! ভাইরাল ছবি ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক]
তন্ত্রসাধনার জন্য যুবকের জিভ কাটার এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করছেন পাকু টুডু। তাঁর পালটা অভিযোগ, তাঁর বাড়ির উঠোনে মদ্যপান করতে এসে তাঁকেই অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল শমাই ও তার বন্ধু। তাই তিনি ওই যুবকদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন। এর বেশি তিনি কিছুই করেননি। জিভ কাটার অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করেছেন প্রৌঢ়। তবে প্রতিবেশীদের সকলের অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাকু টুডুকে আটক করেছিল শান্তিনিকেতন থানার পুলিশ। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।