সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার। লড়াইটা সহজ ছিল না। ১৯৯৮ সালে আইসিসির (ICC) অ্যাসোসিয়েট দেশ হওয়ার পর কেটে গিয়েছে ২৬ বছর। তার পর বহুবার শুধু লড়াই চলেছে। কিন্তু কোনওদিন বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। অবশেষে স্বপ্নপূরণ উগান্ডার (Uganda Cricket Team)।
গত ডিসেম্বরে জিম্বাবোয়েকে হারানোর পর বিশ্বকাপ (ICC T20 World Cup) নিশ্চিত হয়েছিল। আফ্রিকার পূর্ব ভাগ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে ২০২৪-এ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছাড়পত্র জোগাড় করে নিয়েছেন ব্রায়ান মাসাবারা। গত চার বছরে আকর্ষণীয় ক্রিকেট খেলেছেন তাঁরা। ৮৭টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মধ্যে ৬৬টি জিতেছে উগান্ডা। অন্তত অ্যাসোসিয়েট দেশ হিসেবে চমকদার তো বটেই। সে দেশে আজও সে অর্থে সব স্তরে বয়সভিত্তিক দল নেই, প্র্যাকটিসের জন্য উপযুক্ত মাঠের সংখ্যা হাতে গোনা। তার মধ্যে থেকে বিশ্বকাপে উঠে আসা রূপকথা তো বটেই।
[আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ নয়, আসল লক্ষ্য ভারতকে হারানো! পুরনো মন্ত্রেই নিজেদের ফের তাতাচ্ছেন পাক তারকা]
এমনটা দাবি করতে পারেন কাম্পালা থেকে উঠে আসা জুমা মিয়াগি। তাঁর জোরে বোলিংয়ে ভরসা রাখবে 'ক্রিকেট ক্রেনস'রা। বস্তির অসহ্য জীবনযাত্রার মধ্যে বড় হয়ে ওঠা। পরিষ্কার জল নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা কী জিনিস জানেন না অধিকাংশ মানুষই। সেখান থেকে উঠে আসা বোলারের ২১ ম্যাচে পকেটে রয়েছে ৩৪ উইকেট। কীভাবে এই পরিস্থিতি উঠে এসে একজন ক্রিকেটকে আঁকড়ে ধরে? অবাক করেছিল উগান্ডার ভারতীয় কোচ অভয় শর্মাকেও।
ভারতীয়র কথা যখন উঠলই, তখন বলা যেতে পারে আলপেশ রামজানির কথা। জন্ম-কর্ম মুম্বইয়ে। একসময় ক্রিকেট খেলেছেন শিবম দুবের মতো তারকার সঙ্গে। রিজভি দলে সরফরাজ খান, পৃথ্বী শ-র অধিনায়ক ছিলেন। তার পর ছেদ পড়ে ক্রিকেট জীবনে। চাকরি করে দিব্যি চলছিল। কোভিডের সময় ভাগ্যের চাকা সম্পূর্ণ বদলে গেল। চাকরি হারিয়ে তখন আলপেশ অসহায়। বন্ধু ও সতীর্থ দীনেশ নাকরানির ডাকে চলে গেলেন উগান্ডায়। সেখান থেকে বিশ্বকাপের মঞ্চ।
[আরও পড়ুন: শিকড় কলকাতায়, বিশের বিশ্বযুদ্ধে কানাডার পতাকা বাঙালি নিখিলের হাতে]
এদের নিয়েই তৈরি উগান্ডার জাতীয় দল। আছেন ৪৩ বছর বয়সি ফ্র্যাঙ্ক সুবুগা। বিশ্বকাপ খেলার জন্য যিনি অপেক্ষা করে আছেন ১৭ বছর। আফগানিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো দল রয়েছে তাদের গ্রুপে। পরের পর্বে যাওয়া অসম্ভবই বলা যায়। তাহলে কোন লক্ষ্য নিয়ে নামবে তারা? গোটা দেশের দায়িত্ব তাঁদের কাঁধে। ভালো ক্রিকেট তো বটেই। সেই সঙ্গে ক্রিকেটবিশ্বে উত্থান ঘটাতে চায় আফ্রিকার নিজস্ব পরিচিতিতে।