সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোভিড পরিস্থিতিতে ভারত সফর বাতিল করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এরই মাঝে কাশ্মীরের (kashmir) রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ব্রিটেনের এক মন্ত্রী। জানালেন, ৩৭০ ধারা বিলোপের পর থেকে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। তবে এটাও তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, কাশ্মীর সমস্যা ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। তাই এ নিয়ে মধ্যস্থতার পথে হাঁটবে না বরিস সরকার।
ভারত ও পাকিস্তানের কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে এক বিতর্কসভা অনুষ্ঠিত হয় পার্লামেন্টের ওয়েস্ট মিনিস্টার হলে। সেই বিতর্ক সভাতেই ব্রিটেনের এশিয়া বিষয়ক মন্ত্রী নাইজেল অ্যাডমস দাবি করেন, “কাশ্মীরের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।” তবে তিনি জানিয়ে দেন, “এই সমস্যার সমাধান করতে পারে ভারত ও পাকিস্তান। লন্ডন মধ্যস্থতা করবে না।” কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে দু’দেশের সঙ্গেই বরিস জনসন সরকারের প্রতিনিধিরা আলোচনা চালাচ্ছে বলে দাবি করেন অ্যাডামস। ওই বিতর্কসভায় ভূস্বর্গের যোগাযোগ ও জমায়েতের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘পাকিস্তানের সংখ্যালঘুদের বাঁচান’, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন হিন্দু সংগঠনগুলির]
নাইজেল অ্যাডমস আরও জানান, “জম্মু ও কাশ্মীর ব্রিটেনের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই জম্মু ও কাশ্মীরে আটক এবং বিধিনিষেধ নিয়ে ভারত সরকারের কাছে আমরা বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বিদেশ সচিব ডমিনিক রাব ভারত সফরে নয়াদিল্লির প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি উত্থাপন করেছেন।” স্বাভাবিকভাবেই ব্রিটেনের মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে দিল্লি। তাঁদের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে ব্রিটেনের বিদেশনীতি বিষয়ক পরামর্শদাতাদের একটি রিপোর্ট।
ওই রিপোর্টে ভারতকে চিন, সৌদি আরব ও তুরস্কের সঙ্গে ‘ডিফিকাল্ট ফোর’ গোষ্ঠীতে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে রিপোর্টে ওই কূটনীতিবিদরা বলেছেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ নীতির জেরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অর্থাৎ মুসলিম, খ্রিস্টানরা ক্রমাগত কোণঠাসা হচ্ছে। নেহরু নির্ধারিত ধর্মনিরপেক্ষ অবস্থান থেকেও ক্রমশ সরে যাচ্ছে ভারত। পাশাপাশি ভারতে অত্যধিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠতাকেও ভাল চোখে দেখছে না ব্রিটেন (Britain)। এ সমস্ত কারণেই ভারতকে আর অতিরিক্ত সুবিধা না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন ব্রিটেনের ওই পরামর্শদাতারা।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় করোনার ছোবলে মৃত্যুমিছিল, খবর সংগ্রহে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন সাংবাদিকও]
এদিকে ব্রিটেন পার্লামেন্টের কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে এই আলোচনাকে মোটেই ভাল চোখে দেখছে না নয়াদিল্লি। এ প্রসঙ্গে ভারতের হাই কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, “ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশের পার্লামেন্টে আলোচনা করা হোক, তা মোটেই পছন্দ করে না নয়াদিল্লি। ভারত সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা ও ভুয়ো তথ্য এড়ানোর জন্য ব্রিটেন সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে হাই কমিশন।”