সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় এক মাস ধরে চলছে রক্তক্ষয়ী রাশিয়া-ইউক্রেন (Russia Ukraine War) যুদ্ধ। যুদ্ধের পাশাপাশি কূটনৈতিক মহলেও চলছে দড়ি টানাটানি। বিভিন্ন দেশ খোলাখুলি ভাবে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করলেও শান্তির পক্ষে সওয়াল করেছে ভারত (India)। বলতে গেলে ভারত নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে। এহেন পরিস্থিতিতে ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ইগর পোলিখা জানালেন, ভারত সবরকম ভাবে ইউক্রেনের (Ukraine) পাশে দাঁড়ালে তিনি হতেন সবচেয়ে খুশি রাষ্ট্রদূত। অর্থাৎ ঘুরিয়ে তিনি ভারতের সাহায্যের কথা বললেন।
একটি সাক্ষাৎকারে পোলিখা জানিয়েছেন, “রুশ আগ্রাসন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। যেভাবে নাৎসিরা সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল, রাশিয়াও (Russia) সেই একই পথ অবলম্বন করেছে।” এই যুদ্ধ কেবল মাত্র রাশিয়ার ভুল বিদেশনীতির ফল বলেও দাবি করেছেন তিনি। ভারতের বিদেশনীতির প্রশংসা করেছেন ইগর। গতকাল রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটি থেকে ভারতের বিরত থাকার সিদ্ধান্তকেও সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, “কেবল মাত্র চিনের সমর্থন পেয়েছে রাশিয়া।” প্রসঙ্গত, ভারত, আমেরিকা-সহ ১৩ টি দেশ রাশিয়ার আনা প্রস্তাবে ভোট দেয়নি।
[আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপে ভারতের চমক, মেগা টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল স্পনসর বাইজুস]
ইউক্রেনে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের মানবিক সাহায্য (Humanitarian Aid) পাঠানোর সিদ্ধান্তকেও সাধুবাদ জানিয়েছেন কিয়েভের রাষ্ট্রদূত। ভারতের বিদেশনীতির পর্যালোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “আমি খুব ভাল ভাবেই বুঝি কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতের কী কী প্রয়োজন হতে পারে।” নিজেকে একজন ভারতবিদ হিসাবে পরিচয় দিয়ে তিনি বলেছেন, “অনেক সরকারি তথ্যের পাশাপাশি গোপন তথ্যও জানি।” কিন্তু তাঁর প্রথম পরিচয় তিনি একজন রাষ্ট্রদূত। সেই কথা প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, “রাষ্ট্রদূত হিসাবে আমার কর্তব্য নিজের দেশের পক্ষে দাঁড়ানো। কিন্তু অন্য দেশের বিদেশ নীতি সম্পর্কে কথা বলা আমার উচিত নয়।” কিন্তু তিনি সেই সঙ্গেই জানান, “যদি ইউক্রেনের পক্ষে থাকার নীতি গ্রহণ করত ভারত, তাহলে আমি সবথেকে খুশি রাষ্ট্রদূত হতাম।”
ইউক্রেনে রুশ হামলার প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেছেন, “মানসিকভাবে সাংঘাতিক বিপর্যস্ত হয়েছি আমি।” ইউক্রেনে থাকা নিজের পরিবার নিয়েও উদ্বেগ ধরা পড়ল তাঁর গলায়। প্রতিদিন সকালে পরিজনদের খোঁজ নিতে থাকেন তিনি ও দূতাবাসের বাকি কর্মীরা। ইগর বলেন, “রাশিয়া ভেবেছিল ৪ দিনে ইউক্রেন জয় করে ফেলবে।” কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করছে ইউক্রেনও। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যতের দিকে এখন তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।