সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১৯৪১ সালের ডিসেম্বর মাস। তুঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। নাৎসি জার্মানির হামলায় ছারখার ইউরোপ। জাপানি বোমায় রক্তাক্ত পার্ল হারবার। ‘থাউস্যান্ড ইয়ার রাইখ’ গড়ার হিটলারের স্বপ্ন পূর্ণ হল বলে। কিন্তু শর্বশক্তি নিয়ে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে অক্ষশক্তির বিরুদ্ধে গর্জে উঠেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইন্টন চার্চিল। মার্কিন কংগ্রেসে দাঁড়িয়ে তিনি স্পষ্ট বলেন, “আমরাই আমাদের ভাগ্যবিধাতা।” সেই ঐতিহাসিক ঘটনারই যেন পুনর্মঞ্চায়ন ঘটল ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মাধ্যমে।
বুধবার আমেরিকার বুকে দাঁড়িয়ে হংকার দিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy)। যুদ্ধের ভয়াবহ পরিস্থি্তিতেও ইউক্রেন সদম্ভে বেঁচে আছে এবং রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মাথা নত করবে না দেশ বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। চার্চিলের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মৃতি উসকে মার্কিন কংগ্রেসে জ্বালাময়ী বক্তব্য পেশ করেন জেলেনস্কি। তিনি সাফ বলেন, ” ইউক্রেন সদম্ভে বেঁচে আছে। সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও ইউক্রেন হার স্বীকার করেনি। আমরা রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। উউক্রেন ভয় পায় না। এই যুদ্ধে আমেরিকা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
[আরও পড়ুন: জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছে ‘বিকিনি কিলার’ চার্লস শোভরাজ]
এদিন ক্যাপিটল হিলে এক বেনজির দৃশ্য দেখা যায়। জেলেনস্কির ভাষণে চলাকালীন পেছনে ইউক্রেনের পতাকা হাতে দেখা যায় মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও আমেরিরার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে। সদনে ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করে জেলেনস্কি বলেন, “আজ বাখমুট শহর রক্তে ভেজা। ৭০ হাজার মানুষের বাসস্থান এখন শ্মশান। দোনবাস আঞ্চলে ভয়ঙ্কর লড়াই চলছে। বেশ কয়েকবার হাত বদল হয়েছে এলাকাটি। তবে আমরা লড়াই করব।”
উল্লেখ্য, গতকাল টুইটারে মার্কিন মুলুকে নিজের কর্মসূচির কথা জানিয়েছেন জ়েলেনস্কি। তিনি লিখেছেন, ‘‘ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা আরও বাড়াতে আমি আমেরিকার উদ্দেশে পাড়ি দিচ্ছি। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে কথা বলব। আমি মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করব। আমেরিকার কংগ্রেসে বক্তৃতা দেব। এর পাশাপাশি, একাধিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হবে।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গতকালই জেলেনস্কির সফর নিয়ে টুইট করে হোয়াইট হাউস। ‘সাদা বাড়ি’র স্পষ্ট বক্তব্য, যতদিন প্রয়োজন ততদিন ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াবে আমেরিকা। এদিকে, জেলেনস্কির সফরে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে রাশিয়া (Russia)। শান্তি আলোচনাক কোনও প্রশ্ন নেই বলে সাফ জানিয়েছে মস্কো।