সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৌতুকাভিনেতা থেকে দেশনায়ক। দোর্দণ্ডপ্রতাপ রুশ ফৌজকে একশো দিনেরও বেশি নাকানিচোবানি খাইয়েছেন তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সেই ভলোদিমির জেলেনস্কিই এবার পৌঁছে গিয়েছেন দোনবাসে। প্রবল যুদ্ধের মাঝে ইউক্রেনীয় সেনাদের মনোবল বাড়াতে প্রাণনাশের আশঙ্কা সত্ত্বেও তিনি হাজির হয়েছেন যুদ্ধের ময়দানে।
কিয়েভ দখলে ব্যর্থ হওয়ার পর এবার পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলের সেভেরদোনেৎস্ক এবং লিসিচানস্ক- এই দু’টি শহরকে ঘিরে ফেলার চেষ্টায় সেখানে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করছে পুতিন বাহিনী। ওই হামলার এপর্যন্ত দু’হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, রবিবার দোনবাসের লিসিচানস্ক ফ্রন্টলাইনে হাজির হন জেলেনস্কি (Volodymyr Zelensky)। সেখানে কমান্ড পোস্টে সেনার জওয়ানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। তারপর ডোনেৎস্ক অঞ্চলের দক্ষিণ-পশ্চিমের বাখমুট শহরেও জওয়ানদের সঙ্গে দেখা করেন জেলেনস্কি। সেখান থেকে জাপরজাই শহরে মারিওপোল থেকে আসা মানুষজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
[আরও পড়ুন: কিমকে কড়া জবাব, একের পর এক ৮টি মিসাইল ছুঁড়ল আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া]
জানা গিয়েছে, সাক্ষাতে সৈনিকদের জেলেনস্কি বলেন, “আপনাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমাদের রক্ষা করার জন্য দেশবাসী আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছে।” এদিন বিকেলে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, “ওদের (ইউক্রেনীয় সেনা) সঙ্গে দেখা করে, ওদের হতে হাত মিলিয়ে আমি গর্বিত বোধ করছি।” মারিওপোল থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়ে আসা মানুষজনের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে জেলেনস্কি বলেন, “প্রত্যেকটি পরিবারের নিজস্ব কাহিনি রয়েছে। বেশিরভাগের সঙ্গেই কোনও পুরুষ সদস্য নেই। কারণ, দুর্ভাগ্যবশত যুদ্ধের অনেক পরিবারের পুরুষদের মৃত্যু হয়েছে। অনেকেই বন্দি হয়েছেন। কিন্তু শিশুদের জন্য বা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদের বেঁচে থাকতে হবে।”
উল্লেখ্য, দোনবাস অঞ্চলের অর্ধেক এলাকাই লুহানস্কের অন্তর্গত এবং রাশিয়া এখন এই জায়গাটিকেই তাদের যুদ্ধপ্রয়াসের প্রথান কেন্দ্রে পরিণত করেছে। যদি দোনবাস রাশিয়ার (Russia) পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে যায় তাহলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হয়তো ইউক্রেন যুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করতে পারেন। কিয়েভ থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জো ইনউড জানিয়েছেন, পূর্ব দোনবাসে রাশিয়া ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি শহর ও গ্রাম দখল করেছে এবং ইউক্রেনীয় বাহিনী যথেষ্ট বেকায়দায় পড়েছে। কারণ সেনা, কামান, সাঁজোয়া গাড়ি এবং বিমানবাহিনীর শক্তির নিরিখে রাশিয়া অনেকটাই এগিয়ে।