সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনে ত্রাস সৃষ্টি করছে রাশিয়ার ‘কামিকাজে’ বা আত্মঘাতী ড্রোন। কয়েকদিন আগেই কিয়েভ-সহ একাধিক শহরের বুকে আকাশ থেকে মৃত্যুদূতের মতো ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে আসে বিস্ফোরক ঠাসা চালকবিহীন উড়ন্ত যানগুলি। প্রাণ হারান অনেকেই। তাই এবার রুশ ফৌজকে পালটা মার দিতে প্রস্তুত ইউক্রেনীয় সেনা। গোপনে একটি অত্যাধুনিক অস্ত্রও তৈরি করেছে তারা বলে খবর।
সূত্রের খবর, রুশ ড্রোনের পালটা এবার নিজস্ব আত্মঘাতী ড্রোন বাহিনী প্রায় তৈরি করে ফেলেছে ইউক্রেন। এই নয়া ড্রোন ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত হামলা চালাতে সক্ষম। প্রায় ৭৫ কিলোগ্রাম বিস্ফোরক নিয়ে উড়তে সক্ষম এই যানগুলি। ফলে রুশ ভূখণ্ডের একটি বড় অংশ ইউক্রেনের অস্ত্রের আওতায় চলে আসবে। ইউক্রেনীয় অস্ত্রনির্মাণকারী সংস্থা ‘Ukroboronprom’ জানিয়েছে, ড্রোন তৈরির কাজ প্রায় শেষ। কয়েকদিনের মধ্যেই তা সেনাবাহিনীর হাতে চলে আসবে।
বিশ্লেষকদের মতে, হাতিয়ার তৈরির সমস্ত প্রযুক্তি ইউক্রেনের (Ukraine) রয়েছে। বিশেষ করে আমেরিকা ও তুরস্কের মতো ন্যাটো জোটের সদস্যদেশগুলির মদতে সহজেই এই কাজ করতে পারছে তারা। সমর বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছে, এখনও ইউক্রেনের কাছে সশস্ত্র ড্রোন আছে। রয়েছে ‘লয়টারিং অ্যামুউনিশন’ বা উড়ন্ত বোমা। কিন্তু সেগুলির ক্ষমতা সীমিত।
[আরও পড়ুন: জেহাদিদের মদতদাতা পাকিস্তান মুক্তি পেলেও FATF-এর কালো তালিকাভুক্ত মায়ানমার]
প্রায় আট মাস ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ করছে রাশিয়া। কিন্তু কিছুতেই বাগে আনতে পারছে না দেশটিকে। কিয়েভের অভিযোগ, এবার আমজনতাকে ‘কামিকাজে ড্রোনে’র মাধ্যমে নিশানা করছে হতাশাগ্রস্ত পুতিন বাহিনী। ‘কামিকাজে’ শব্দটি জাপানি। এর অর্থ হচ্ছে ‘দৈবী হাওয়া’। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি ফৌজের বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ শাখাকে বলা হতো ‘কামিকাজে স্পেশ্যাল অ্যাটাক ইউনিট’। এদের কাজ ছিল শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজে আত্মঘাতী হামলা চালানো। ‘কামিকাজে’ পাইলটরা বারুদ ঠাসা প্লেন নিয়ে মার্কিন রণতরীগুলির উপর আছড়ে পড়ার চেষ্টা করতেন। একই পদ্ধতিতে হামলা চালাচ্ছে রুশ ড্রোনগুলি। রাশিয়াকে এই কামিকাজে ড্রোন দিচ্ছে ইরান (Iran)। এগুলির নাম ‘শাহেদ-১৩৬’। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দাবি করেছেন, এমন প্রায় ২ হাজার ৪০০টি ড্রোন কিনেছে মস্কো।
উল্লেখ্য, ক্রুজ মিসাইলের তুলনায় এই কামিকাজে ড্রোনগুলি অনেকটাই সস্তা। একটি ড্রোনের মূল্য প্রায় ২০ হাজার ডলার। কয়েকশো কিলোমিটার দূরে হামলা চালাতে সক্ষম এগুলি। সুদূর ঘাঁটি থেকে বসে এই ড্রোনের মাধ্যমে শত্রুর উপর নজর রাখা যায়। তারপর নিশানা মিললেই আকাশ থেকে বজ্রের মতো আছড়ে পড়ে তাকে ধ্বংস করে দেয় এই অস্ত্র। ঝাঁকে হামলা করে বলে ইউক্রেনের মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমও এগুলিকে সম্পূর্ণভাবে রুখে দিতে অক্ষম।