সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বাচনে বিপুল ভোট পেয়ে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন কিয়ের স্টার্মার। তাঁর দল লেবার পার্টির কাছে হেরে গিয়েছে ঋষি সুনাকের কনজারভেটিভ পার্টি। আর মসনদে বসেই গাজা যুদ্ধ তিনি ফোনে কথা বলেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। অবিলম্বে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত থামানো, পণবন্দিদের দ্রুত দেশে ফেরানো এরকম একাধিক বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন স্টার্মার।
১০ মাস পেরিয়ে গিয়েছে। হামাস নিধনে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। ইতিমধ্যে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩৮ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। এই মৃত্যুমিছিল নিয়ে সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। ব্রিটেনেও নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজার দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পর রবিবার স্টার্মার ফোনে কথা বলেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে। সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, স্টার্মার অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ, পণবন্দিদের দ্রুত দেশে ফেরানো এবং গাজায় ত্রাণ সরবরাহ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে।
[আরও পড়ুন: ত্রিশঙ্কু ভোটের ফল, ফ্রান্সে মুখ পুড়ল প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর]
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি সংগঠন হামাস। এই হামলার কড়া নিন্দা জানিয়েছিলেন ব্রিটেনের সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার বার্তা দিয়ে নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এমনকী অক্টোবর মাসেই ইজরায়েলে গিয়েছিলেন সুনাক। সেসময় খানিক তাঁর সুরেই সুর মিলিয়েছিলেন স্টারমার। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগও উঠেছিল লেবার পার্টির প্যালেস্টাইনপন্থী নেতাদের ভোটের টিকিট না দেওয়ার। তখন যুদ্ধবিরতির কথাও খুব একটা শোনা যায়নি তাঁর গলায়। যা নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন স্টারমার। নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে অবস্থান বদলাতে থাকেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কথা বলতে দেখা যায় তাঁকে। বিশ্লেষকদের মতে, সংখ্যালঘুদের সমর্থন ধরে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে গাজা যুদ্ধ নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন স্টারমার।
এদিকে, গত ১০ মাস ধরে গাজার করুণ অবস্থাই দেখছে গোটা দুনিয়া। হামাস নিধনে ইজরায়েলের অভিযানে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছে গোটা গাজা ভূখণ্ড। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ কৃষিজমি। যার জেরে তীব্র হয়েছে খাদ্য সংকট। সম্প্রতি এমনই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এনেছে রাষ্ট্রসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা। ইজরায়েলের অভিযানের ফলে গাজায় তীব্র হয়েছে ওষুধের সংকটও। যা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। গাজায় জারি রয়েছে মৃত্যুমিছিল। মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গিয়েছে ৩৮ হাজার। হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে মৃতদেহে। আহতের সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলে সবকিছু সামাল দিকে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে। এর মাঝেই এপ্রিল মাস থেকে দেখা দিয়েছে ওষুধের আকাল।