মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: এক মাসের শিশুর বিরল টেস্টিকিউলার টরশন অস্ত্রোপচার হল উলুবেড়িয়ার গঙ্গারামপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। অপারেশনের পর সুস্থ রয়েছে দুধের শিশুটি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৪ হাজারের মধ্যে একজন শিশুর এই রোগ হয়। শিশুটি আসার কয়েক ঘন্টার মধ্যে এই অস্ত্রোপচার করা হয়। পচন ধরে যাওয়ায় একটি অণ্ডকোষ বাদ দেওয়া হয়েছে। নাহলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে জীবন সংশয় হতে পারত একরত্তির।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের বেগুসরাইয়ের এক দম্পতি তাঁদের একমাত্র পুত্র সন্তানকে নিয়ে হাওড়ার ফুলেশ্বরে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সেখানে হঠাৎই শিশুটি প্রচন্ড কাঁদতে থাকে। পরিবারের লোকেরা শিশুটিকে দুপুর বারোটা নাগাদ নিয়ে আসেন উলুবেড়িয়ার ওই বেসরকারি হাসপাতালে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শুভময় করণ শিশুটিকে দেখেন। দেখা যায় শিশুটির বাঁদিকের অণ্ডকোষের কাছে লাল হয়ে ফুলে রয়েছে। চিকিৎসক আল্টাসোনোগ্রাফি করেন এবং সেখানে বোঝা যায় টেস্টিকিউলার টরশন (অণ্ডকোষের শিরা পেঁচিয়ে রক্ত সঞ্চালনের অভাবে পচন ধরে যাওয়া) হয়েছে। দ্রুত ডাকা হয় চাইল্ড সার্জেন তনুশ্রী কুন্ডুকে। তিনি অপারেশনের উদ্যোগ নেন।
এর পর ডাকা হয় অ্যানাস্থেসিস্ট রাজদীপ কোলেকে। সমস্ত ব্যবস্থাপনার পর সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ অস্ত্রোপচার শুরু হয় এবং রাত আটটায় শেষ হয়। চিকিৎসক তনুশ্রী কুন্ডু জানান,"এটা বিরল রোগ। কারণ সাধারণত ১২ থেকে ১৮ বছরের ছেলেদের মধ্যে বিষয়টি দেখা যায়। কিন্তু এক মাসের শিশুর টেস্টিকিউলার টরশন বিরল। এক্ষেত্রে সাধারণত ছয় ঘন্টার মধ্যেই অপারেশন করতে হয়। দেরি হলে জীবন সংশয় হতে পারে। শিশুটির বাঁদিকের অণ্ডকোষ থেকে অন্য অণ্ডকোষে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ত। সবচেয়ে বড় কথা এক মাসের শিশুকে অজ্ঞান করা রীতিমতো রিস্কের ছিল। যাই হোক, রাজদীপ কোলে শিশুটিকে পুরো অজ্ঞান করেন এবং মিনিট চল্লিশের মধ্যে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। শিরা পেঁচিয়ে যাওয়া অণ্ডকোষটি কেটে বাদ দেওয়া হয়।" তিনি আরও বলেন, তিনজন মিলে টিম হিসেবে কাজ করায় এই অপারেশনে সাফল্য পাওয়া গিয়েছে। শিশুটি এখন সুস্থ রয়েছে। তাকে শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে। পরবর্তীকালে সে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।