সুকুমার সরকার, ঢাকা: আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উপর চাপ বাড়িয়েছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলো। সেই সুরে সুর মিলিয়ে এবার বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি অবনতি ঘটছে বলে উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করল রাষ্ট্রসংঘ।
নির্বাচন ইস্যুতে দেশের প্রধান ৩ রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি জানান, আমেরিকা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাংলাদেশে একটি অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। সব পক্ষকে শর্তহীন আলোচনায় যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে, মার্কিন প্রশাসনের ভিসানীতির বিষয়টি মনে করিয়ে দেন হাস। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, যারা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করবে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বঘোষিত মার্কিন ভিসানীতি (থ্রিসি) কার্যকর হবে। আমেরিকার আলোচনার উদ্যোগের অংশ হিসাবে দেশের প্রধান ৩ রাজনৈতিক শাসকদল আওয়ামি লিগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে চিঠি দিয়েছেন আমেরিকার দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী বিদেশ সচিব ডোনাল্ড লু।
[আরও পড়ুন: ‘সরকার গঠন জনগণের সিদ্ধান্ত’, বিএনপিকে অস্বস্তিতে ফেলে ভারতের পথে হাঁটল আমেরিকা]
উল্লেখ্য, হাসিনা সরকার ভেঙে দেওয়ার দাবিতে গত এক মাস ধরে বিএনপি ও তাদের ইসলামপন্থী সমমনা দলগুলো বনধ -অবরোধ জারি রেখেছে। যার জেরে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে রাজধানী ঢাকা-সহ একাধিক জায়গা। এর মাঝেই ন্যায্য মজুরির দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিদেশে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এই প্রেক্ষিতে পোশাক শ্রমিক এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানানো রাজনৈতিক কর্মীদের উপর কঠোর দমন-পীড়ন চলছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ।
এছাড়া সাংবাদিক, মানবাধিকার রক্ষাকারী ও সুশীল সমাজের নেতাদেরও হয়রানি করা হচ্ছে। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক হিংসা, বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার, রাজনৈতিক কর্মীদের নির্বিচারে আটক, সরকারের অত্যধিক বলপ্রয়োগ এবং বিক্ষোভকে ব্যাহত করার জন্য ইন্টারনেট বন্ধের ঘটনাগুলোতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ। অভিযোগ উঠেছে, বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে আটক অনেক ব্যক্তিকে গোপন স্থানে রেখে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তবে সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা অস্বীকার করেছে। বাংলাদেশের বৈষম্যবিরোধী আইনে দুর্বলতা দেখতে পেয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। বিশেষ করে জাতি, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, প্রতিবন্ধী, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশে বৈষম্য বিদ্যমান। বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে রাষ্ট্রসংঘের।