shono
Advertisement
Election commission

মমতার চাপে সিদ্ধান্ত বদল কমিশনের! ১৯৮৭-র ১ জুলাইয়ের পরে জন্মানো কাউকে দিতে হবে না বাড়তি নথি

নয়া নির্দেশিকা জারি করল কমিশন।
Published By: Kishore GhoshPosted: 08:17 PM Jun 30, 2025Updated: 08:24 PM Jun 30, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চলতি বছরে বিহারে বিধানসভা ভোট। ঠিক তার আগে সেখানে ভোটার তালিকার নিবিড় সমীক্ষা (স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন) করার কথা ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। যা বিতর্কের জন্ম দেয়। সরব হন বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, বাংলায় প্রয়োগের আগে টেস্ট ড্রাইভ চলছে কি? নিবিড় সমীক্ষা করে ঘুরপথে এনআরসি আনার পথ প্রশস্ত করছে কেন্দ্র? শেষ পর্যন্ত মমতার প্রতিবাদে পিছু হঠল নরেন্দ্র মোদি সরকার। সোমবার নিবিড় সমীক্ষা নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল নির্বাচন কমিশন। নয়া নির্দেশিকায় কী বলা হয়েছে?

Advertisement

বিহারের ২০০৩ সালের ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে নথিভুক্ত ৪.৯৬ কোটি ভোটারের নথি রয়েছে। নতুন করে আর কোনও নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ৪.৯৬ কোটি ভোটারের স্বীকৃতির জন্য বাবা বা মায়ের কোনও নথি জমা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কোনও ভোটারের নাম যদি ২০০৩ সালের বিহারের ভোটার তালিকায় না-ও থাকে, সে ক্ষেত্রে তিনি নিজের বাবা কিংবা মায়ের অন্য কোনও নথির পরিবর্তে ২০০৩ সালের ভোটার তালিকাটি ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ, মা কিংবা বাবার জন্য আলাদা করে কোনও নথি দেখানোর প্রয়োজন নেই। মোট ভোটারদের প্রায় ৬০ শতাংশকে কোনও নথি জমা দিতে হবে না। শুধু ২০০৩ সালের ভোটার তালিকা থেকে বিবরণ যাচাই করে আবেদন ফর্ম জমা দিতে হবে।

উল্লেখ্য, নির্বাচনের কমিশনের আগের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই থেকে ২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বরের মধ্যে যাঁদের জন্ম, তাঁদের জন্মতারিখ অথবা জন্মস্থানের প্রমাণস্বরূপ একটি নথি এবং তাঁদের বাবা কিংবা মায়ের জন্মতারিখ অথবা জন্মস্থানের প্রমাণ রয়েছে এমন একটি নথি জমা দিতে হবে। এছাড়াও যে সব ভোটার ২ ডিসেম্বর ২০০৪ তারিখের পরে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে নিজের জন্মতারিখ ও জন্মস্থানের প্রমাণ হিসাবে যে কোনও একটি নথি এবং বাবা-মায়ের জন্মতারিখ ও জন্মস্থান প্রমাণের নথি জমা দিতে হবে। যদি কারও বাবা কিংবা মা ভারতীয় না হন, সে ক্ষেত্রে তাঁর পাসপোর্ট ও সন্তান জন্মের সময়কার ভিসার কপি জমা দিতে হবে।

বলা হয়, অবৈধ ভোটারদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে সংশোধনের কাজ করছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই কারণে বিভিন্ন রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি ‘ডিক্লারেশন ফর্ম’। যদিও কমিশনের বেশ কিছু নিয়ম নিয়ে আপত্তি তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্র আসলে বাংলা এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের নিশানা করতে চাইছে। সে কারণেই এমন নিয়ম। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কথা না-বলে নির্বাচন কমিশন কখনওই এটা করতে পারে না। আমাদের গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসনব্যবস্থা রয়েছে। এখানে রাজনৈতিক দল বা নির্বাচিত সরকার কখনওই ক্রীতদাস নয়।"

মমতা স্পষ্ট জানান, ”ভোটার তালিকা সংশোধন করার জন্য আমাদের কাছে কমিশন একটা ফর্ম পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেই ডিক্লারেশন ফর্মের কয়েকটি বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। কেন উল্লেখ করা হচ্ছে যে ১৯৮৭ থেকে ২০০২-এর মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের তা লিখতে হবে ফর্মে? তার মানে কি তার আগে বা পরে যারা জন্মেছে, তাদেরটা হবে না?" আরও বলেন, "তরুণ প্রজন্ম যাতে ভোট দিতে না পারে, সেই কারণেই কি এই নিয়ম? গরিবেরা কী ভাবে বাবা-মায়ের শংসাপত্র পাবেন? এটা কি এনআরসি? এ ভাবেই দেশে এনআরসি চালু করার চেষ্টা হচ্ছে কি?" মমতার এই প্রতিবাদের কয়েক দিনের মধ্যে নতুন নির্দেশিকা প্রকাশ করল নির্বাচন কমিশন।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রীই যে সবার আগে প্রতিবাদ সোচ্চার হয়েছেন, সেকথা মনে করিয়ে দেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এ নিয়ে প্রথম আওয়াজ তুলেছিলেন। অবশেষে তাঁর চাপে কমিশনকে নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নতুন নির্দেশিকা জারি করতে হল। মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত রাখতে বারংবার মমতাদিই বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধার কাজটা করে চলেছেন। ওঁর আন্দোলনের জন্য সারা দেশ সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র পেয়েছে। সেই ধারা আজও অব্যাহত।"

প্রসঙ্গত, বিহারের বর্তমানে মোট ভোটারের সংখ্যা ৮ কোটি। শেষবার কমিশনের দ্বারা এই নিবিড় সমীক্ষা হওয়ার সময় ভোটার সংখ্য়া ছিল মোট ৪.৯৬ কোটি। যা বর্তমানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এদিন কমিশন সাফ জানিয়েছে, ২০০৩ সালের তালিকায় ৪.৯৬ কোটি ভোটারের নথি-বিবরণ মিলেছে। তাই নতুন করে তাঁদের আলাদা নথি জমা দিতে হবে না। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বিহারের ২০০৩ সালের ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
  • বিহারের বর্তমানে মোট ভোটারের সংখ্যা ৮ কোটি।
  • ২০০৩ সালের তালিকায় ৪.৯৬ কোটি ভোটারের নথি-বিবরণ মিলেছে।
Advertisement