shono
Advertisement

হুগলির হরিপালে দ্বারিকাচণ্ডী রূপে পুজিতা হন দেবী দুর্গা

পুজো শুরু করেছিলেন রাজা বল্লাল সেন। The post হুগলির হরিপালে দ্বারিকাচণ্ডী রূপে পুজিতা হন দেবী দুর্গা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:22 PM Oct 11, 2018Updated: 03:28 PM Oct 12, 2018

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ রইল  হরিপালের দ্বারহাট্টায় সিংহরায় বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।

Advertisement

দিব্যেন্দু মজুমদার , হুগলি:  হুগলির হরিপালের দ্বারহাট্টায় সিংহরায় বাড়িতে প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গার আরাধনা হয়ে আসছে। দশভূজা এখানে দ্বারিকাচণ্ডী রূপে পূজিতা হন। স্থানীয়দের মতে,  সিংহরায় বাড়ির দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। ভক্তদের মনোকামনা অপূর্ণ রাখেন না তিনি । 

 শোনা যায়, সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন একসময় ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য বঙ্গদেশে আসেন। জলপথে ভ্রমণ করার সময়ে তাঁর নৌকা নোঙর করেছিল দ্বারহাট্টায়। ব্যবসায় প্রচুর পরিমাণে ধন দৌলত অর্জনের জন্য মায়ের মূর্তি স্থাপন করে পুজো শুরু করেছিলেন বল্লাল সেন। ব্যবসা ফুলে ফেঁপে উঠতে সময় নেয়নি। লাভের মুখ দেখে স্বভাবতই খুশি হন রাজা। এরপর নিজের রাজ্যে ফিরে যান তিনি। বল্লাল সেন প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটি রয়ে যায় জঙ্গলে। ওই জঙ্গলে সাধনা করতেন হরিপালের দ্বারহাট্টায় সিংহরায় পরিবারের এক সদস্য। স্বপ্নে দেখা দিয়ে দেবী তাঁকে বলছেন, ‘আমাকে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা করে পুজো কর।’ এরপরই জঙ্গল থেকে দেবীর মূর্তি উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠা করেন ওই ব্যক্তি। শুরু করেন মায়ের নিত্যপুজো। পরবর্তীকালে দ্বারিকাচণ্ডীর নামে ওই এলাকা দ্বারহাট্টা নামে পরিচিত হয়।   

[এবার পুজোয় আপনিও দুর্গা কিংবা অসুর, জানেন কীভাবে?]

দেবী দ্বারিকার হাটই আজ দ্বারহাট্টা নামে সকলের কাছে পরিচিত। সেই সময় থেকে দেবীর নিত্যপুজো হয়ে চলেছে। তবে বাদ সাধে প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এক ভয়াবহ দুর্যোগের দিনে আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে মন্দিরের সঙ্গে মূর্তিটিও ধ্বংস হয়ে যায় । তারপর থেকে ঘটেই পুজো হত। সম্প্রতি ফের মূর্তি তৈরি করে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেছেন সিংহরায় পরিবারের বর্তমান সদস্য। দুর্গাপুজো উপলক্ষে এখানে প্রতিপদ থেকে নবমী পর্যন্ত রোজই চন্ডীপাঠ হয়। সপ্তমীতে ঘট বদল হয়। তারপর নতুন ঘট স্থাপন করা হয়। প্রথা মেনে সপ্তমীর সন্ধিপুজোয় ও নবমীতে ছাগ বলি হয়। সন্ধিপুজোর সব থেকে বড় আকর্ষণের ডাক প্রথা। দ্বারিকাচণ্ডীর মন্দিরে সন্ধিপুজো শেষ হলে বারোয়ারি পুজোগুলিতে সন্ধিপুজো শুরু হয়। এটাই এখানকার রীতি। সেদিন গ্রামের সব বারোয়ারি পুজো কমিটির প্রতিনিধিরা এসে মন্দিরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ান। এরপর পুজো শুরু হওয়ার মুহুর্তেই ‘ডাক’ পড়ে। মায়ের মন্দিরে সন্ধিপুজোর শুরু হয়েছে। এটিকেই ‘ডাক’ বলা হয়েছে। প্রত্যেকের মুখে মুখে ঘুরতে থাকে, মন্দিরে মায়ের পুজো শুরু হয়েছে। লোক মুখে এই ‘ডাক’ বারোয়ারি পুজো মণ্ডপে পৌঁছানোর সঙ্গেসঙ্গে শুরু হয় সন্ধিপুজো। এক কথায় দ্বারহাট্টাবাসীর কাছে মা দ্বারিকাচণ্ডী মঙ্গলময়। তাই মায়ের পুজো সবার আগে। তাছাড়া গত ৩০০ বছরেরে বেশি সময় ধরে মা দ্বারহাট্টাবাসীর সুখ দুঃখে থেকে তাদের বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে চলেছেন। তাই আজও সবার আগে মা দ্বারিকাচণ্ডী দ্বারহাট্টাবাসীর মনে জায়গা করে নিয়েছেন। 

[দূষণ রোধে নয়া চমক, পাট দিয়েই প্রতিমা গড়ছেন উদ্যোক্তারা]

The post হুগলির হরিপালে দ্বারিকাচণ্ডী রূপে পুজিতা হন দেবী দুর্গা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement