shono
Advertisement

মায়ের মুখ পুড়িয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের সম্মান জানাল এই পুজো

অ্যাসিড আক্রান্তদের ভোকেশনাল ট্রেনিং দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। The post মায়ের মুখ পুড়িয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের সম্মান জানাল এই পুজো appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 12:00 PM Nov 06, 2018Updated: 12:05 PM Nov 06, 2018

অভিরূপ দাস: “আমিই সেই মেয়ে, বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে দিনের আলোয় যার ছায়া মাড়ানো নিষিদ্ধ..একদিন হয়তো সমস্ত মিথ্যা পোশাক ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমিই হয়ে উঠব সেই অসামান্যা ।” অ্যাসিড পড়েছে কালীর মুখে! তাতেই পুড়ে গিয়েছে মুখের বাঁদিকটা। বিভৎস সে মুখের দিকে তাকানো যায় না। “কিন্তু তাকাতে হবেই। চাইতে হবে আশীর্বাদ।”  ঢাকুরিয়া তরুণ মহলের পুজোয় এভাবেই হৃত সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া হবে অ্যাসিড আক্রান্তদের। জেলার প্রতিটি কোণ থেকে আসে অ্যাসিড আক্রান্তের খবর। খবরের কাগজে তাদের ছবি ছাপা হয় না। পুড়ে যাওয়া মুখের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েই থাকেন পাঠক। অস্ফুটে বলেন, “ও মুখ দেখা যায় বলুন।” কিন্তু চামড়া পুড়লেও যে স্বপ্ন পোড়ে না। পোড়ানো যায় না অন্তরাত্মাকে। ব্যানারে মায়ের মুখ পুড়িয়ে এমনটাই বার্তা দিচ্ছে ঢাকুরিয়ার পুরনো ক্লাব।

Advertisement

[অমাবস্যা ছাড়া যে কোনওদিন আপনার হাতেও পুজো নেবেন এই ‘বড় মা’]

পথচলতি জনসাধারণ চেয়ে দেখছেন পুজোর ব্যানারের দিকে। ওকি! বিশ্রী ভাবে পুড়ে গিয়েছে বুক-মুখ-চোখ। তার মধ্যে থেকেই মা বলছেন “আমিই সেই মেয়ে, বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে দিনের আলোয় যার ছায়া মাড়ানো নিষিদ্ধ..একদিন হয়তো সমস্ত মিথ্যে পোশাক ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমিই হয়ে উঠব সেই অসামান্যা।” চমকে ওঠেন দর্শকরা। মায়ের এমন অবস্থা কে করল? আর এই চমকে যাওয়াকেই পাথেয় করছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। বলছেন, “তাহলেই ভাবুন। ওদেরও কত কষ্ট হয়েছে।” সর্বসাধারণকে এভাবেই চমকে দিতে চাইছেন পুজোর কর্তারা। তাঁদের কথায়, “অ্যাসিড আক্রান্তদের সমাজের মূল স্রোতে ফিরিয়ে দিতে হবে। তাদের পুড়ে যাওয়া মুখের দিকে করুণাভরে নয়, স্বাভাবিকভাবে তাকাতে হবে। তাদের এ অবস্থার জন্য সমাজই দায়ী।”

মা তাই প্রাণভরে তাকাবেন তাঁদের দিকে। শুধু তাকাবেনই না। আশীর্বাদও করবেন প্রাণভরে। জনা ছয়েক অ্যাসিড আক্রান্তকে নিয়েই পুজোর উদ্বোধনে ঢাকুরিয়া তরুণ মহল। যাঁরা মণ্ডপের চৌহদ্দিতে আসতে কিন্তু কিন্তু করতেন, তাঁদেরকেই হাত ধরে মায়ের পায়ের কাছে নিয়ে আসার এ এক অনবদ্য প্রচেষ্টা। শুধু উদ্বোধনই নয়, তাঁদের চলার পথে এগিয়েও দিতে চায় ক্লাব। আগামী কয়েক মাস তাই ক্লাবের উদ্যোগে অ্যাসিড আক্রান্তদের ভোকেশনাল ট্রেনিং দেওয়া হবে। বিউটিশিয়ান কোর্স থেকে কম্পিউটার, ডিটিপি। শেখানো হবে ধূপকাঠি-মোমবাতি তৈরিও। তরুণ মহলের স্বপ্নের ডানা লাগবে সুতপা-সুজাতা-কাকলি-সাহানারাদের গায়ে। তাতেই উড়ান দেবেন তাঁরা। ঢাকুরিয়া তরুণ মহলের শ্রীকুমারবাবুর কথায়, “কাজ শিখে ওরা স্বনির্ভর হয়ে উঠুক। রোজগারের পথ খুঁজে পাক। আমাদের আরাধনা সার্থক হবে।”

[মহাকালীর এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে মোঘল সম্রাট আকবরের নাম]

এ পুজোয় এবার অপাঙক্তেয়দের আলোয় আনার লড়াই। শুধু অ্যাসিড আক্রান্ত নয়, পুজোর পরদিন ভোগ বিতরণ অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বৃদ্ধাশ্রমের সদস্যদের। তাঁরাই সেদিনের অতিথি। পুজো মণ্ডপ আলো করে থাকবেন রূপান্তরকামীরাও। দীপাবলির আলো জ্বালাতে অবহেলিতদেরই বেছে নিয়েছে তরুণ মহল।

The post মায়ের মুখ পুড়িয়ে অ্যাসিড আক্রান্তদের সম্মান জানাল এই পুজো appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement