এবছর করোনা আবহেই পুজো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাবগুলিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি৷ কলকাতার বাছাই করা কিছু সেরা পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন টালা পার্ক প্রত্যয়ের পুজোর প্রস্তুতি৷
সুলয়া সিংহ: ‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে।’ আজকের দিনে কী প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে কাজী নজরুল ইসলামের পংক্তিগুলি! দীর্ঘ দিন ঘরবন্দি মানুষগুলো লকডাউনের পর চিৎকার করে যেন এ কথাই বলার চেষ্টা করছেন। খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে সতেজ বাতাসে একবুক নিঃশ্বাস নিতে মরিয়া প্রত্যেকে। কিন্তু এখনই সে ইচ্ছা সম্পূর্ণ রূপে পূরণ হওয়ার উপায় নেই। তাই তো এই নর্মাল জীবনের সঙ্গে ‘নিউ’ শব্দটি জুড়ে গিয়েছে। তবে কালের নিয়ম মেনে নিউ নর্মালেও আবির্ভূত হচ্ছেন দেবী দুর্গা। তাঁকে বরণ করতে তো কোনও কার্পণ্য চলে না। তিনি যে জীবনের চেয়েও মূল্যবান। কোহিনুর হীরের মতোই। আর সেই কোহিনুরই এবার হয়ে উঠছে টালা পার্ক প্রত্যয়ের সম্পদ। হ্যাঁ, দর্শনার্থীদের এবার কোহিনুর উপহার দেবেন শিল্পী।
তাহলে আর একটু খোলসে করে বলা যাক। শিল্পী সুশান্ত পালের প্রযুক্তির কেরামতিতে দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল হয়ে ওঠে লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মঞ্চ। যার হাত ধরে দর্শনার্থীরা কখনও মন্ত্রমুগ্ধের মতো কল্পলোকে বিচরণ করেন তো কখনও তাঁর মণ্ডপে মা অধরাই রয়ে যান। করোনা কালে আয়োজনে বিস্তর কাটছাঁট হয়েছে। ছোট হয়েছে প্যান্ডেলের পরিসরও। কিন্তু দেবী দুর্গা যে অমূল্য। উমার বাড়ি ফেরার অপেক্ষাতেই যে কাটে গোটা বছরটা। তাই কাচের মধ্যে কোহিনুরের মতোই অমূল্য রতন হয়ে শোভা পাবেন সুসজ্জিত মা দুর্গা (Durga Puja)। এবং পিছনের বিরাট পর্দায় দেবীর আবির্ভাব তাঁর সর্বত্র বিরাজমান থাকার বার্তা দেবে। আর মায়ের আগমন ও উৎসবকে সামনে রেখে মহামারীতে সাধারণের পাশে দাঁড়ানো সংকল্প এই ক্লাবের। সেই দু’য়ে মিলেই এবার টালা পার্ক প্রত্যয়ের ভাবনার পোশাকি নাম ‘লোকহিত’।
[আরও পড়ুন: উৎসবে আয়োজন নয়, করোনা কালে ‘লৌকিক’ ছোঁয়ায় শারদ অঞ্জলি ৯৫ পল্লিতে]
অতিমারীর কামড়ে যেখানে বিধ্বস্ত স্বাভাবিক জীবন, সেখানে শুধু উৎসবে মেতে ওঠাই তো উদ্দেশ্য নয়, দুর্গাপুজোকে প্রকৃত অর্থে সার্থক করে তুলতে তাই নানা হিতৈষী পদক্ষেপ করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যেই ক্লাবের একটি স্যানিটাইজেশনের গাড়ি তিলোত্তমার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে স্যানিটাইজের কাজ করেছে। আগামিদিনে আরও নানা সমাজসেবামূলক কাজের মধ্যে দিয়ে দেশ ও দশের পাশে থাকতে অঙ্গীকারবদ্ধ তারা। মায়ের আশীর্বাদেই ‘লোকহিতে’র প্রতিজ্ঞা নিয়েছে ক্লাব। উৎসবেই হোক তার শুভ সূচনা।
