সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্রমশ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে ফিলিপিন্সের তাল আগ্নেয়গিরি। কয়েকদিন ধরে চলছে অবিরাম লাভা উদগীরণ। এমনকী আগ্নেয়গিরি লাগোয়া হ্রদের নিচ থেকেও ম্যাগমা নির্গত হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, সেখান থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। যা কিনা জলের সংস্পর্শে আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করতে পারে। বড়সড় বিপদের আশঙ্কায় আশেপাশের এলাকা থেকে দেড় লক্ষাধিক মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যত্র। বাতাঙ্গাস প্রদেশে এই আগ্নেয়গিরির একেবারে পাশে অবস্থিত শহরটি প্রায় পুরো খালি করে দেওয়া হতে পারে।
ফিলিপিন্স ভলক্যানোলজি অ্যান্ড সিসমোলজির তরফে বলা হয়েছে, তাল থেকে অবিরত ধোঁয়া নির্গমন এবং মৃদু কম্পন হচ্ছে। জানা যাচ্ছে, আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে যে ছাই বেরচ্ছে, তার উচ্চতা প্রায় ৫০ মিটার পর্যন্ত ছুঁয়ে যাচ্ছে। সংস্থার প্রধান অধিকর্তা রেনাতো সলিডাম সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আমরা শুধুমাত্র ভূস্তরের উপরের ছবিটা দেখতে পাচ্ছি। হ্রদের জলের নিচে যে কী চলছে, তা বোঝার উপায় নেই। তবে ম্যাগমার প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে, আগ্নেয়গিরিটি আরও ভয়ংকর রূপ নিতে পারে। তবে সর্বোচ্চ মাত্রায় সতর্কতা জারি রয়েছে। কারণ, যে কোনও মুহূর্তে সেখানে বড়সড় বিস্ফোরণ ঘটে যেতে পারে।”
[আরও পড়ুন: ইয়েমেনের সেনা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে জঙ্গি হামলা, মৃত কমপক্ষে ৬০]
তবে সতর্কতা কিছুটা উপেক্ষা করে এখনও তাল হ্রদে নৌকা ভাসাচ্ছেন মৎস্যজীবীরা। তাঁদের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি নৌকায় রয়েছেন উপকূলরক্ষী বাহিনীর অন্তত একজন করে সদস্য। সেইসঙ্গে বিপদ বুঝলে দ্রুত সরে আসার মতো প্রস্তুতিও রাখা হয়েছে মাছ ধরার নৌকাগুলিতে। জালে মাছও উঠছে ভালই। মৎস্যজীবীদের বক্তব্য, হ্রদের তলদেশে মারাত্মক বিস্ফোরণ হতে শুরু করলে, ছাইয়ের সংস্পর্শে এসে বিষাক্ত হয়ে যাবে জল। মাছের মৃত্যু হবে। তাই এখনই তাঁরা তা সংগ্রহ করে রাখছেন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই এলাকাটির অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয়বলয়ের মধ্যে। জলের নিচে লুকিয়ে সক্রিয় সব আগ্নেয়গিরি, যা গোটা পৃথিবীর অগ্ন্যুৎপাত এবং ভূমিকম্পের উৎস। যার একটি ফিলিপিন্সের তাল আগ্নেয়গিরি। এটি সে দেশের দ্বিতীয় সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। বেশ কয়েকবার এখান থেকে অগ্ন্যুৎপাতের জেরে বিপর্যয় ঘটেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ২০০৮ থেকে ২০১১ – এই সময়ের মধ্যে আগ্নেয়গিরিটি সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিল। ২০১৯ সালেও অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালের মধ্যে এবারের মতো আতঙ্ক ছড়ায়নি।
[আরও পড়ুন: পদ-প্রাসাদের পর রাজকীয় উপাধি ছাড়লেন হ্যারি-মেগান, বিবৃতিতে জানাল বাকিংহাম প্যালেস]
উপকূলরক্ষী বাহিনী যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে এলাকা খালি করে দিচ্ছে। বাসিন্দারা নিজেদের সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে বাড়ি ছাড়ছেন। অন্যদিকে, প্রকৃতির এই অভিশাপ যাতে জনগণের উপর আছড়ে না পড়ে, তার জন্য উপাসনাস্থলগুলিতে চলছে যাগযজ্ঞ, প্রার্থনা।
The post হ্রদের তলদেশ থেকে লাভা নির্গমন-কম্পন, আতঙ্ক বাড়াচ্ছে ফিলিপিন্সের তাল আগ্নেয়গিরি appeared first on Sangbad Pratidin.