নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যের বকেয়া নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনও উত্তপ্ত সংসদ। মঙ্গলবার ফের বকেয়া মেটানোর দাবিতে লোকসভায় সরব হলেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। পালটা জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতি। যা রীতিমতো উত্তপ্ত করে তুলল লোকসভা। তবে, এসবের মধ্যে কিছুটা হলেও অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিতও মিলেছে।
এদিন সংসদ অধিবেশন চলাকালীনই আলাদা করে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গিরিরাজ সিং। গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতি যেখানে কড়া সুরে তৃণমূলের সাংসদদের সমালোচনা করছেন, সেখানে সুর অনেকটাই নরম ছিল খোদ ক্যাবিনেট মন্ত্রীর। সুদীপের দাবি, গিরিরাজই তাঁকে প্রস্তাব দিয়েছেন যাতে বকেয়া ইস্যুতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) বৈঠকের বন্দোবস্ত করা যায়।
[আরও পড়ুন: গেরুয়া ঝড়ের রেশেই ফের কামাল, আবার সর্বকালের রেকর্ড উত্থান সেনসেক্সের]
বস্তুত বকেয়া ইস্যুতে এই মুহূর্তে রীতিমতো সম্মুখসমরে কেন্দ্র ও রাজ্য। কিছুদিন আগেই তৃণমূলের প্রতিনিধিরা বাংলা থেকে দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী নিরঞ্জনা জ্যোতির সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বাধীন তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। সেই নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনও সরব হয়েছিলেন সুদীপ। মঙ্গলবারও সরব হন। যথারীতি এদিনও সাধ্বী নিরঞ্জনা জ্যোতি সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। এবং পালটা দাবি করেন, তৃণমূলের প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যই ছিল না তাঁর সঙ্গে দেখা করার।
[আরও পড়ুন: ‘আরও ব্যর্থতা আসবে, তৈরি থাকুন’, নাম না করে ফের বিরোধীদের খোঁচা মোদির]
সুদীপের (Sudip Banerjee) দাবি, এসব বাক্য বিনিময়ের আড়ালে গিরিরাজ সিং নিজে উদ্যোগ নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তৃণমূল সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানান, বকেয়া ইস্যুতে তৃণমূল যতদূর যেতে হয় যাবে। কেন্দ্রের যদি দুর্নীতির অভিযোগ থাকে, তাহলে সেই সামান্য কিছু টাকা কেটে নিয়ে বাকি টাকাটা দিয়ে দেওয়া হোক। গোটা বাংলার মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেছেন। কোন কোন গ্রামে দুর্নীতি হয়েছে, সেগুলো বেছে নিয়ে সেই টাকাটা বাদ দিয়ে বাকি টাকা মিটিয়ে দিক কেন্দ্র। এভাবে রাজ্যকে অর্থনৈতিক অবরোধের মুখে ফেলবেন না। সুদীপের দাবি, এর পরই গিরিরাজ তাঁকে প্রস্তাব দেন, “এই ইস্যুতে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হোক।” উল্লেখ্য, রাজ্যের বকেয়া মেটানোর দাবিতে এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাতেও জট কাটেনি। কেন্দ্র নতুন করে বৈঠকের যে প্রস্তাব দিচ্ছে, সেটা হলেও কতটা লাভ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।