সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৃহযুদ্ধে রক্তাক্ত ইথিওপিয়া (Ethiopia)। প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের নেতৃত্বে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে তুমুল লড়াই চালাচ্ছে তাইগ্রে বিদ্রোহীরা। ক্রমে রাজধানী আদিস আবাবার দিকে এগিয়ে দুর্নিবার গতিতে এগিয়ে আসছে তারা। এহেন পরিস্থিতিতে সমস্যার সমাধান খুঁজতে বৈঠকে বসেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। আর সেখানে যুযুধান সকল পক্ষকে সংযত হওয়ার আবেদন জানিয়েছে ভারত।
[আরও পড়ুন: ‘আমরা গিনিপিগ নই’, টিকাকরণের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের রাজপথে হাজার হাজার মানুষ]
ইথিওপিয়ায় গৃহযুদ্ধ নিয়ে সোমবার বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত ভারতের সহকারী স্থায়ী প্রতিনিধি আর রবীন্দ্র বলেন, “ইথিওপিয়ায় রাষ্ট্রসংঘের ত্রাণকার্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এটা খুবই চিন্তার বিষয়। সকল পক্ষেরই সংযত হওয়া উচিত।” তিনি আর জানান, ভারত ইথিওপিয়ার সার্বভৌমত্বের সম্মান করে। সেখানে দ্রুত ত্রাণ ও যুদ্ধবিরতির পক্ষে মত নয়াদিল্লির। বলে রাখা ভাল, আফ্রিকায় নজর দিয়েছে চিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে আফ্রিকার দেশগুলির সংগে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে ভারত। এহেন সময়ে ইথিওপিয়ার সংঘাত থামানোর উদ্যোগে ভারত অংশ নিলে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হবে।
গত বছর খানেক ধরেই প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চলছে ‘তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট’ (TPLF) বিদ্রোহীদের। তাইগ্রে প্রদেশের দখল রয়েছে টিপিএলএফ-এর হাতে। ইথিওপিয়ার রাজনীতিতে তাইগ্রেদের প্রভাব যথেষ্ট। কিন্তু ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসে সেই ক্ষমতা খর্ব করার চেষ্টা করেন আবি। আর তার ফলেই শুরু হয় সংঘাত। ২০২০ সালের নভেম্বরে তাইগ্রেতে ইথিওপিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক হামলা হয়। তারপর দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে আইনের শাসন ফেরাতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন আবি আহমেদ। প্রাদেশিক রাজধানী মেকেলে থেকে টিপিএলএফের নেতাদের উৎখাতের পর অভিযান সফল হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু বিগত দিনে পরিস্থিতি পালটেছে। শক্তি বাড়িয়ে এবার রাজধানী আদিস আবাবার দিকে এগিয়ে আসছে তাইগ্রে বিদ্রোহীরা। দ্রুত দেশের অন্য অংশে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অনাহারের মুকঘে পড়েছে কয়েক লক্ষ মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে অন্তত ২০ লক্ষ মানুষ। সবমিলিয়ে দেশটিতে এই মুহূর্তে চরম অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।