অংশুপ্রতিম পাল, খড়গপুর: সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখাই ছিল 'অপরাধ'। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে যোগী সরকারের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হতে হয়। জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হন উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় চিকিৎসক ডাক্তার কাফিল খান। সেই অকুতোভয় শিশু বিশেষজ্ঞ কাফিল খান এবার দাঁড়ালেন বাংলার বানভাসি মানুষের পাশে। ২০ জনের একটি মেডিক্যাল টিম নিয়ে সুদূর উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর থেকে ছুটে এসেছেন ডেবরায়। শুরু করেছেন স্বাস্থ্যশিবির।
২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএএ বিরোধী একটি বিক্ষোভ সভায় উপস্থিত ছিলেন ডাক্তার কাফিল খান। সরকার বিরোধী বক্তব্য রেখেছিলেন, এই অভিযোগে জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেটা ২০২০ সাল। যদিও সে বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি জামিনে মুক্তি পান। ফিরে আসেন জনসেবামূলক পেশায়। ফের শুরু করেন ডাক্তারি।
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু করেছেন বানভাসি মানুষজনকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন কাফিল খান। তিনি ডেবরা ব্লকের মলিঘাটি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের জোতহাড়ো জ্ঞানদাময়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিবির চালু করেছেন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতা ও উদ্যোগে। ডেবরার এই এলাকা বন্যা প্লাবিত। অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বহু মানুষ। এদিন তিনি প্রায় ৬০০ মানুষের চিকিৎসা করেছেন। যার অধিকাংশই দাদ, হাজা, চুলকানি, ঘা ও ফুসফুসের সমস্যা সংক্রান্ত।
বানভাসি মানুষদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার ফাঁকে এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যের জন্য সরব হয়েছেন কাফিল খান। তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার তো করছেই। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সাহায্য করা।" পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, বন্যার জল নেমে যাওয়ার পরেও এসব রোগ ছড়াতে পারে। বন্যার দূষিত জল থেকে রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। শুধু চিকিৎসা করাই নয়। ওষুধ-সহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন। আর এরকম একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক ও তাঁর দলকে হাতের সামনে পেয়ে বন্যা কবলিত এই এলাকার মানুষজন রীতিমতো নিশ্চিন্ত। এধরনের একটি চিকিৎসা শিবির করা দরকার ছিল বলে মনে করছেন তাঁরা।