সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চার মাস ধরে ভারতীয় সেনায় (Indian Army) কাজ করছেন। প্রত্যেক মাসে বেতনের টাকাও ঢুকছে তাঁর ব্যাংকে। যথাযথ ইউনিফর্ম, সেনার পরিচয়পত্র সবকিছুই রয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে হঠাৎ জানতে পারলেন, আসলে সেনাবাহিনীতে তাঁকে নিয়োগ করাই হয়নি! টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) ওই যুবককে। কিন্তু আসলে তাঁর চাকরি জোটেনি।
কিছুদিন আগে মেরঠে এফআইআর দায়ের করেন মনোজ কুমার নামে বছর কুড়ির এক যুবক। তাঁর দাবি, চারমাস ধরে পাঠানকোটের ট্রানজিট ক্যাম্পে কাজ করছেন তিনি। ইনস্যাস রাইফেল, পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে সেনার ইউনিফর্ম-সবকিছুই দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। প্রাথমিকভাবে মনোজকে দিয়ে ফাইফরমাশ খাটানো হত। তবে কিছুদিন পর থেকেই মনোজের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন জাগতে থাকে সহকর্মীদের মনে। সংশয় দূর করার জন্য খোঁজখবর শুরু করতেই বেআইনি নিয়োগের বিষয়টি জানতে পারেন মনোজ।
ঠিক কীভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল মনোজকে? জানা গিয়েছে রাহুল সিং নামে সেনার এক প্রাক্তন কর্মীর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল মনোজের। সেনার উচ্চপদস্থ অফিসার হিসাবে নিজের পরিচয় দিয়ে রাহুল জানিয়েছিলেন, সেনাবাহিনীতে মনোজকে চাকরির সুযোগ করে দিতে পারেন তিনি। ১৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেবেন রাহুল, এমনই কথা হয় দু’জনের। টাকা দেওয়ার কিছুদিন পরে সেনা ছাউনিতে গিয়ে রান্না করতে হয় মনোজকে। সেই সঙ্গে কিছু পরীক্ষা দিতে হয়। সব ক্ষেত্রে পাশ করে সেনাবাহিনীতে নিযুক্ত হন মনোজ।
[আরও পড়ুন:পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, মুখ্য নির্বাচন কমিশনার পদে ‘সেরা ব্যক্তি’কে প্রয়োজন, বলল সুপ্রিম কোর্ট]
কাজে যোগ দেওয়ার পরে সহকর্মীরা মনোজের পরিচয়পত্র দেখে বুঝতে পারেন, সেগুলি নকল। এই অভিযোগ নিয়ে রাহুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মনোজকে কানপুরের একটি ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আচমকাই সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যেতে বলা হয় মনোজকে। এই বিষয় নিয়ে রাহুলকে প্রশ্ন করলে তিনি মনোজকে ভয় দেখান। তারপরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন মনোজ।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত রাহুল ও তাঁর এক সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, রাহুলের সেনার পরিচয় ব্যবহার করে তরুণদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার লোভ দেখাত ওই সঙ্গী। এখনও ফেরার রয়েছে এই চক্রের আরেক সদস্য। প্রসঙ্গত, পাঠানকোটের যে ক্যাম্পে মনোজকে ‘পোস্টিং’ দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে সীমান্তের বিপদসংকুল অঞ্চলে কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেন জওয়ানরা। এহেন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সেনা নিয়োগের কাজেও কীভাবে দুর্নীতি চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।