সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ডাক বিভাগের কর্মীকে মাঝরাস্তা থেকে অপরহণের চেষ্টা! কাঠগড়ায় যোগীরাজ্যের পুলিশ। অভিযোগ, যুবকের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ থাকায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে এসেছিল উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। মাঝরাস্তা থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তারা। তবে রাজ্য পুলিশের চেষ্টায় দ্রুত উদ্ধার করা হয় ওই যুবককে। বুধবার আইনি প্রক্রিয়া পেয়ে ট্রানজিট রিমান্ডে তাঁকে হেফাজতে নিতে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কর্তারা।
রাজস্থানের বাসিন্দা মাখনলাল মিনা দুর্গাপুরে সিটি সেন্টারের ভারতীয় ডাক বিভাগে কর্মরত। দুর্গাপুরের পিয়ালা এলাকার নব ওয়ারিয়ায় স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকেন। মঙ্গলবার সকালে অন্যান্য দিনের মতোই বাইকে করে ৩ কিলোমিটার দূরে অফিসে যাচ্ছিলেন তিনি। অভিযোগ, জাতীয় সড়কে ওঠার আগেই একটি গাড়ি এসে তাঁর বাইকে হালকা ধাক্কা দেয়। মাখনলাল পড়ে যেতেই চারজন যুবক ওই গাড়ি থেকে নেমে তাঁকে গাড়িতে তুলে নেয়। এই ঘটনায় মুহুর্তে আতঙ্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় দুর্গাপুর থানার পিয়ালা সংলগ্ন নবওয়ারিয়া এলাকা। পুলিশের কাছে খবর পৌঁছতেই শুরু হয় জেলার বিভিন্ন প্রান্তে নাকা চেকিং। ঝাড়খণ্ড আর বাংলার সীমান্ত আসানসোলের ডুবুরডি চেক পোস্টে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পুলিশের সক্রিয়তায় ধরা পরে উত্তরপ্রদেশের গাড়িটিও। সেই গাড়িতে ছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
[আরও পড়ুন: বিয়ের আগে উদ্দাম পার্টি সোনাক্ষী-জাহিরের! শেয়ার করলেন একাধিক ছবি]
কন্যাপুর থানার পুলিশকর্মীরা উত্তরপ্রদেশের পুলিশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে আগ্রা পুলিশ কমিশনারেটের সাবিন থানা এলাকায় চুরি-সহ আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে মাখনলালের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মাখনলাল মীনাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছিল তারা। আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই এভাবে অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি আটকে দেয় রাজ্য পুলিশ। নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুর থানায়।
আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (দুর্গাপুর) সুবীর রায় বলেন,"এই খবর জানাজানি হতেই আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সমস্ত জায়গায় নাকা চেকিং শুরু হয়। খুব কম সময়ের মধ্যেই উদ্ধার হয় যুবক। উত্তরপ্রদেশে পুলিশ গ্রেপ্তারের সমন নিয়েই ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে। তবে আইনি পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় আমরা ওই যুবককে ফিরিয়ে নিয়ে আসি। এটা অপহরণের কোনও ঘটনা নয়। এবার যা আইন আছে সে আইন মোতাবেক কাজ হবে।" অভিযুক্ত মাখনলালের ভাড়া বাড়ির মালিক হরেনচন্দ্র দাসের দাবি,"জানতে পারি, আমার বাড়ির ভাড়াটিয়া মাখনলাল মিনা অপহরণ হয়েছে। তার কিছুক্ষণ পরেই জানতে পারি মাখললাল উদ্ধার হয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশকে ধন্যবাদ।" দুর্গাপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নথি তৈরি করে বুধবার দুর্গাপুর আদালতে ধৃতের ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন করবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।