সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশের (Bangladesh) আসন্ন নির্বাচন নিয়ে এবার প্রকাশ্যে কাজিয়ায় জড়াল আমেরিকা ও রাশিয়া। এর আগে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যেসব ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ বা সংস্থা-প্রতিষ্ঠান বাধা হয়ে দাঁড়াবে, তাদের ভিসা দেওয়া হবে না বলে হুশিয়ারী দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA)। আমেরিকার এই হুঁশিয়ারি নিয়ে শাসকদল আওয়ামি লিগ ও প্রধান বিরোধী দল পরস্পরের প্রতি আঙুল তুলে বলছে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলা ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে’ হস্তক্ষেপ বলে মনে করে না যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাংবাদিক বৈঠকে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে অন্য কোনও দেশ যদি আমাদের সঙ্গে কথা বলে আমরা সেটিকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মনে করি না।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ ধরনের আলোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই। অবশ্য এরই মাঝে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (EU) প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের (EC) সঙ্গে বৈঠক সেরেছে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজি হাবিবুল আউয়াল এবং আরও দুই নির্বাচন কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলিও অংশ নেন।
[আরও পড়ুন: Ananta Maharaj: ফোকাসে উত্তরবঙ্গ, রাজ্যসভায় বিজেপির বাজি অনন্ত মহারাজ!]
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি আমেরিকার দিক থেকে যেসব তৎপরতা দেখা যাচ্ছে, তা নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের সিনিয়র নেতা এবং সরকারের দিক থেকে প্রকাশ্যে ‘অসন্তুষ্টি’ প্রকাশ করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক টুইটারে এক বিবৃতির মাধ্যমে বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমী দেশগুলো যে তৎপরতা দেখাচ্ছে, সেটি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নগ্ন হস্তক্ষেপে’র শামিল। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া এবং সহকারী সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু ১১ জুলাই থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।
[আরও পড়ুন: ইসলাম নিয়ে ভারত গর্বিত! মুসলিম সম্মেলনে গিয়ে মন্তব্য অজিত ডোভালের]
বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা এবং ইউরোপের (Europe) যে কূটনৈতিক তৎপরতা চলছে, সেই প্রেক্ষাপটে এই সফরকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও সবার অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে আগ্রহ দেখাচ্ছে সেটিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেছে রাশিয়া, চিন ও ইরান। এছাড়া ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্কে এর সমালোচনা করা হয়েছে।
ম্যাথিউ মিলার বলেন, বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে অন্যদের কেন আপত্তি থাকবে সেটি তিনি বুঝতে পারছেন না। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে তার প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করেছেন। মিলার বলেন, বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলের বিপরীতে আরেকটি রাজনৈতিক দলকে তারা সমর্থন করেন না। বরং সত্যিকার গণতান্ত্রিক ধারাকে সমর্থন করে আমেরিকা।