সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাচ্ছে। একবার নয় একাধিকবার ঘটেছে এহেন দুর্ঘটনা। তাই নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আপাতত অত্যাধুনিক চিনুক হেলিকপ্টারগুলির উড়ান বন্ধ করে দিয়েছে আমেরিকা। আর এর ফলে চিন্তায় পড়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। কারণ, ভারতীয় বায়ুসেনার হাতেও এই চপার রয়েছে।
‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি চিনুকের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ফলস্বরূপ আমেরিকার ফৌজের ৪০০টি চিনুকের উড়ান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মার্কিন সেনার মুখপাত্র সিন্থিয়া স্মিথ সে কথা স্বীকার করে বলেছেন, প্রযুক্তি সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি সংশোধনের জন্য সাময়িক ভাবে চিনুকের উড়ান বন্ধ রাখা হয়েছে। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, “সবার আগে ফৌজের জওয়ানদের নিরাপত্তা জরুরি। আমাদের বিমানগুলিকে সুরক্ষিত করার সমস্ত চেষ্টা আমরা করছি।”
[আরও পড়ুন: স্বদেশি প্রযুক্তিতেই বাজিমাত ভারতের! এবার তেজস যুদ্ধবিমান কিনতে আগ্রহী আর্জেন্টিনা]
এদিকে, এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন ভারত। কারণ, ভারতীয় সেনাবাহিনীর অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে মার্কিন সংস্থা বোয়িংয়ের তৈরি চিনুক কপ্টার। তবে এখনই ভারতীয় বায়ুসেনার ব্যবহৃত চিনুক কপ্টারগুলির উড়ান বন্ধ করা হচ্ছে না বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে। এই ‘হেভি লিফট’ বা ভারি ওজন বহনে সক্ষম হেলিকপ্টারগুলি রাতেও উড়তে পারে। জওয়ানদের নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে হাতিয়ার নিয়ে যাওয়া, পরিকাঠামো নির্মাণের জিনিসপত্র বহনের মতো কাজ করতে পারে। এক লপ্তে অন্তত ৪৫ জন সেনা জওয়ান এবং ১১ টন ওজন পেটের মধ্যে নিয়ে উড়ে যেতে পারে এই হেলিকপ্টারগুলি। এ ছাড়া নীচে ঝুলিয়ে আরও ১০০ কুইন্টাল ভারি জিনিস বহন করে উড়তে পারে চিনুক এইচ-৪৭।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে আমেরিকার তৈরি এই কপ্টারটি প্রথমবার হাতে পায় ভারত। বর্তমানে ১৫টি চিনুক কপ্টার রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে। ২০১৫ সালে ১৫টি চিনুক এবং ২২টি অ্যাপাচে হেলিকপ্টার কিনতে বরাত দেওয়া হয়েছিল প্রস্তুতকারী সংস্থা বোয়িংকে। খরচ পড়েছিল মোট ১৮ হাজার কোটি টাকা। বায়ুসেনা ব্যবহৃত সোভিয়েত জমানার এমআই-৩৬ ভারী পরিবহণ হেলিকপ্টারগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে আসার কারণেই ‘পরিবর্ত’ হিসেবে চিনুক আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই হেলিকপ্টারই এবার চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।