সংবাদ প্রতিদিন ডি়জিটাল জেস্ক: ফিরছে ঠান্ডা লড়াইয়ের দুনিয়া কাঁপানো দিনগুলো? আবারও কি ঘনাচ্ছে পরমাণু যুদ্ধের মেঘ? ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে উঠছে এমন প্রশ্নই। জল্পনা আরও বাড়িয়ে কম্প্রিহেন্সিভ নিউক্লিয়ার টেস্ট ব্যান ট্রিটি বা সিটিবিটি চুক্তি থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে রাশিয়া। এই প্রেক্ষাপটে পরমাণু অস্ত্রে রাশ টানা নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে আমেরিকা ও চিন।
সম্প্রতি হোয়াইট হাউস জানায়, চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের সংবাদমাধ্যম সচিব ক্যারিন জিন-পিয়ের এমনটাই জানিয়েছেন। কবে হবে ওই বৈঠক? বলা হয়েছে, নভেম্বরেই সানফ্রান্সিসকোতে বৈঠকে বসতে চলেছেন বাইডেন (Joe Biden) ও জিনপিং। এনিয়ে দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, পরমাণু অস্ত্রে রাশ টানা নিয়ে আলোচনা হতে পারে দুই রাষ্ট্রপ্রধানের।
[আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধে নিহত ভারতীয় বংশোদ্ভূত ইজরায়েলি সেনা, শোকস্তব্ধ ‘লিটল ইন্ডিয়া’]
বিশ্লেষকদের মতে, সোভিয়েত পরবর্তী জমানার সমস্ত সমীকরণ পালটে দিয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। পড়শি দেশটিকে কাবু করতে না পেরে ফের পরমাণু অস্ত্রের আস্ফালন শুরু করেছে রাশিয়া। বিশ্বে আধিপত্যের লড়াইয়ে নেমেছে চিনও। ফলে ত্রিমুখী আণবিক ইঁদুর দৌড় শুরুর সম্ভাবনা প্রবল হয়ে উঠেছে। এছাড়া, পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা রুখতে তৈরি সিটিবিটি চুক্তি থেকেও বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে রাশিয়া যা পরিস্থিতি আরও ঘোরাল করে তুলেছে। তাই বাইডেন ও জিনপিংয়ের আলোচনায় পরমাণু অস্ত্রে রাশ টানার প্রসঙ্গটি প্রাধান্য পেতে চলেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে রাশিয়া ও অমেরিকার মধ্যে হওয়া ‘Intermediate-Range Nuclear Forces Treaty’ বা আনবিক মিসাইল সংক্রান্ত চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসে ট্রাম্প প্রশাসন। সোভিয়েত জমানার শেষ নেতা মিখাইল গর্বাচেভ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল আইএনএফ চুক্তি। এই চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ কিলোমিটার থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের ক্রুজ মিসাইল নিষিদ্ধ করা হয়। যার জেরে অস্ত্রভাণ্ডার গড়ার প্রতিযোগিতায় রাশ টানা গিয়েছিল। আতঙ্ক কাটিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছিল দুটি মহাযুদ্ধের দুঃস্বপ্ন ভুলতে না পারা ইউরোপের মানুষ। এদিকে, আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে থাকা এসটিএআরটি (Strategic Arms Reduction Treaty) চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর কাছে সর্বোচ্চ কতগুলো পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকবে, তা নিয়েই ওই চুক্তি হয়েছিল।