সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রবেশ করলেও শান্তি, নিরাপত্তা বিঘ্নিত করেনি মার্কিন রণতরী। বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দিল আমেরিকা। পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কে ফিরবি জানিয়েছেন, ‘ইউএসএস জন পল জোনস’ রণতরীটি মালদ্বীপের জলভাগে ‘ইনোসেন্ট প্যাসেজ’ করেছে। ভারতের কড়া অবস্থানের পর তাঁদের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
গত ৭ এপ্রিল নয়াদিল্লির অনুমতি ছাড়াই আমেরিকার সপ্তম নৌ বহরের যুদ্ধজাহাজ লাক্ষাদ্বীপের পশ্চিমে ১৩০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে প্রবেশ করার খবর সামনে আসে। এটি ভারতের বিশেষ আর্থৈনিতক জোনের মধ্যে পড়ে। বিনা অনুমতিতে মার্কিন রণতরীর এই এলাকায় প্রবেশ নিয়ে হইচই শুরু হয়। ঘটনার কথা সামনে আসতেই বিবৃতি দেয় বিদেশ মন্ত্রক। জানিয়েছিল, রাষ্ট্রসংঘের নীতি অনুযায়ী, কোনও দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনা অনুমতিতে অন্য কোনও দেশের রণতরী সামরিক মহড়া করতে পারে না। এই নীতিই ভারত মেনে চলে। বিদেশমন্ত্রক আরও জানিয়েছিল, “ইউএসএস জন পল জোনস রণতরীকে পারস্য উপসাগর থেকে মালাক্কা প্রণালীতে প্রবেশ করতে দেখা গিয়েছে। এই এলাকা ভারতের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল। বিষয়টি সম্পর্কে কূটনৈতিক স্তরে আমেরিকাকে জানানো হয়েছে।”
[আরও পড়ুন : ধর্ম খুইয়ে আরতি হল আয়েষা! পাকিস্তানে ফের প্রকাশ্যে হিন্দু নিপীড়নের ছবি]
সেই সময় আমেরিকা দাবি করেছিল,”জাহাজটি নাব্যিক অধিকার এবং স্বাধীনতা প্রয়োগ করে লক্ষদ্বীপের পশ্চিমে ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রায় ১৩০ নটিক্যাল মাইল ভিতরে প্রবেশ করে। যার জন্য আন্তর্জাতিক আইন মেনেই অনুমতি নেওয়া হয়নি। ভারতের নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চলে সামরিক মহড়া বা কসরত চালাতে গেলে আগে থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক আইনে এই নিয়ম খাটে না। নৌবহর নিয়ে এই ধরনের স্বাধীন অভিযান (ফ্রিডম অব নেভিগেশন অপারেশন) চালিয়েই থাকি আমরা। অতীতেও চালিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও চলবে।”
আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সুরক্ষা আইন অনুযায়ী, উপকূল থেকে সমুদ্রের ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত যে কোনও দেশের জলসীমা। তবে রাষ্ট্রসংঘের সমু্দ্র আইন বলছে, উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত এলাকায় কোনও দেশের অর্থনৈতিক কাজকর্ম চালানোর অধিকার আছে। এই এলাকাকে ‘নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল’ বলে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই আইনে স্বাক্ষর করেছে ভারত। তবে আমেরিকা তাতে স্বাক্ষর করেনি। তাই তাদের নৌবাহিনী কোনও নিয়ম লঙ্ঘন করেনি বলে জানিয়েছে আমেরিকা। এদিন পেন্টাগনের প্রেস সেক্রেটারি জন কিরবি জানালেন, রণতরীটি মালদ্বীপের জলভাগে ‘ইনোসেন্ট প্যাসেজ’ করেছে। কী এই ইনোসেন্ট প্যাসেজ? কোনও জলভাগের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় জাহাজটি উপকূলের দেশটির নিরাপত্তা, শান্তি বিঘ্নিত করেনি। অর্থাৎ ওই জলসীমায় কোনও সামরিক মহড়া করা হয়নি।