সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্তফা দিলেন আফগানিস্তানে (Afghanistan) নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত জালমে খলিলজাদ। সোমবার মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র দেন তিনি। পদত্যাগের কারণ হিসেবে খলিলজাদের যুক্তি, আফগানিস্তান নিয়ে মার্কিন নীতির নয়া পর্যায়ে নতুনদের জন্য পথ ছেড়ে দিতে চাইছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: প্রবল খাদ্য সংকটেও হুঁশ নেই কিমের, আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল উৎক্ষেপণ উত্তর কোরিয়ার]
টুইন টাওয়ার হামলার পর আফগানিস্তানে প্রায় দুই দশক ধরে যুদ্ধ করেছে আমেরিকা। আর সেই যুদ্ধ শেষ করায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে খলিলজাদের। কাতারের রাজধানী দোহায় বিগত বছর দুয়েক ধরে তালিবানের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। কার্যত, তাঁর জন্যই আফগানিস্তান নিয়ে তালিবানের সঙ্গে শান্তিচুক্তি করে আমেরিকা এবং সেদেশ থেকে ফৌজ সরিয়ে ফেলে ওয়াশিংটন। কিন্তু গত আগস্ট মাসে পাহাড়ি দেশটি থেকে মার্কিন ফৌজ চলে যাওয়ার পর কাবুল দখল করে তালিবান। আর এখানেই ব্যর্থ খলিলজাদ। গায়ের জোরে কাবুল দখল না করার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত কথা রাখেনি জেহাদিরা। আর এখানেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় খলিলজড় ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে।
বর্তমানে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যে তাঁর প্রত্যাশামতো মোড় নেয়নি সেই কথা স্বীকার করে নিয়েছেন খলিলজাদ। নিজের ইস্তফাপত্রে তিনি লেখেন, “আফগান সরকার ও তালিবানের মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা প্রত্যাশামতো এগোয়নি। এর কারণ অত্যন্ত জটিল। আগামীদিনে এই বিষয়ে তথ্য তুলে ধরব আমি।” বলে রাখা ভাল, আফগানিস্তানে জন্ম নেওয়া খলিলজাদ প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়রের আমলে শীর্ষ কূটনৈতিক পদ সামলেছেন। কাবুল ও বাগদাদে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এবার তাঁর জায়গায় আফগানিস্তানে বিশেষ দূত হিসেবে থমাস ওয়েস্টকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই দোহা শান্তি আলোচনার অন্যতম কান্ডারি জালমে খলিলজাদ স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে আশরফ ঘানি কাবুল ছেড়ে না পালালে শেষ মুহূর্তে আফগান সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান হয়ে যেত। এক সাক্ষাৎকারে খলিলজাদ জানান, পরিকল্পনা ছিল যে আফগানিস্তানে ক্ষমতা ভাগ নিয়ে রাজনৈতিক সমাধান না মেলা পর্যন্ত তালিবানকে কাবুলে ঢুকতে না দেওয়া। সেই উদ্দেশে কাতারে আমেরিকা ও তালিবানের মধ্যে আলোচনাও চলছিল। কিন্তু ঘানি কাবুল ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া মাত্র সরকারি বাহিনী অস্ত্র ফেলে দেয়। ফলে রাজধানীতে ক্ষমতার শূন্যস্থান তৈরি হয় আর সেই সুযোগে কাবুলে তালিবান ঢুকে পড়ে।