সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় তিন দশকের রুশ-মার্কিন মিসাইল চুক্তি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে এল ওয়াশিংটন। ফের ঠান্ডা লড়াইয়ের উদ্বেগ ছড়িয়ে অবশেষে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই হল ‘ইন্টারমেডিয়েট রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস ট্রিটি’ বা আইএনএফ চুক্তির।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীর ইস্যুতে ফের ‘মধ্যস্থতা’র বার্তা ট্রাম্পের, তোপ ভারতের]
১৯৮৭ সালে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ আইএনএফ চুক্তিতে সই করেন। এ চুক্তির আওতায় পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ভূমি থেকে নিক্ষেপযোগ্য ৫০০ থেকে ৫,০০০ কিলোমিটার পাল্লার সব ধরনের ক্রুজ মিসাইল নিষিদ্ধ করা হয়। ‘কিউবান মিসাইল ক্রাইসিস’ থেকে শুরু করে একাধিক ঘটনায় বহুবার পারমাণবিক যুদ্ধের দোরগোড়া থেকে ফিরে আসে আমেরিকা ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। দুই মহাশক্তির আণবিক সংঘর্ষে পৃথিবীতে প্রলয় আসা একপ্রকার নিশ্চিত ছিল। শেষমেশ বিপজ্জনক ওই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে উদ্যোগী হন রেগান ও গর্বাচেভ। পরবর্তীকালে সোভিয়েতের পতন হলেও, চুক্তিটি মেনে নেই রাশিয়া। ঐতিহাসিক চুক্তিটির কথা মাথায় রেখেই ১৯৯১ সালে প্রায় ২ হাজার ৭০০টি আণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম মিসাইল ধ্বংস করে দুই দেশ।
চলতি বছরের গোড়ার দিক থেকেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে আইএনএফ চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলতে শুরু করে আমেরিকা ও ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলি। গোপনে নয়া দুরপাল্লার মিসাইলের পরীক্ষামূল উৎক্ষেপণ করছে মস্কো বলেও অভিযোগ জানায় ওয়াশিংটন। গত ফেব্রুয়ারি মাসেই চুক্তিটি থেকে সরে দাঁড়ানোর হুমকি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারপর শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই কথা ঘোষণা করল আমেরিকা। পাশাপাশি চুক্তি ভঙ্গের সমস্ত দায় রাশিয়ার উপর চাপিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেও। তাঁর সাফ কথা, ‘চুক্তিটি ভেস্তে যাওয়ার জন্য দায়ী রাশিয়া।’ পালটা আমেরিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে পম্পেওর দাবি খারিজ করেছে রাশিয়া।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে, রাশিয়াকে নজরে রেখে একটি নয়া ধরনের ক্রুজ মিসাইল পরীক্ষা করতে চলেছে আমেরিকা। তুরস্কে রুশ ‘মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম’ ও ইউরোপে মস্কোর ‘আগ্রাসন’ ঠেকাতেই এই নয়া মিসাইলটি কাজে লাগবে ওয়াশিংটন বলে খবর। এদিকে, চুক্তিটি ভেস্তে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলিও। ন্যাটোর জেনারেল সেক্রেটারি জেনস স্টলেনবার্গ জানিয়েছেন, রাশিয়া সঙ্গে কোনও ধরনের অস্ত্র প্রতিযোগিতাই নামবে না তারা। তবে জোটের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির সুরক্ষায় সবসময় হাজির থাকবে ন্যাটো। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ।
[আরও পড়ুন: কীভাবে ‘জেহাদের যুবরাজ’ হামজাকে গ্রাস করল মৃত্যু, রিপোর্টে ফাঁস তথ্য]
The post ভাঙল তিন দশকের রুশ-মার্কিন মিসাইল চুক্তি, ফের শুরু ঠান্ডা লড়াই! appeared first on Sangbad Pratidin.