সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা আক্রাম্ত হয়ে কোমায় চলে গিয়েছিলেন ৬৯ বছরের লরেন্স নোকেস। বাঁচার আশা একেবারেই ছিল না। তবে ডাক্তারদের হাতযশে সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। স্বাভাবিক হয়েছিল শ্বাসপ্রশ্বাসও। সুস্থ হয়ে উঠতেই স্ত্রূীর খোঁজ শুরু
করেছিলেন নোকেস। তখনই মর্মান্তিক সত্যটা সামনে আসে। জানতে পারেন, তিনি হাসপাতালে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এরপর সমস্ত চিকিৎসা নিতে অস্বীকার করে মৃত্যুবরণ করলেন নোকেসও।
আমেরিকার মেরিল্যান্ডের মাউন্ট এয়ারির প্লেসান্ট ভিউ নার্সিংহোমে নার্সিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন লরেন্স। এলাকার ৯৫ জন বাসিন্দার মধ্যে ৮৪ জনের করোনা ধরা পড়ে। শুশ্রুষা করতে করতে আক্রান্ত হন লরেন্সও। ৩০ মার্চ তাঁকে ক্যারল হসপিটাল সেন্টারে
ভরতি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার পাঠানো হয় ইনকিউবেটরে। প্রায় এক সপ্তাহ কোমায় থাকার পর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় তাঁর। জ্ঞান ফিরে আসার পর লরেন্স প্রথমেই তাঁর স্ত্রী মিনেটের কথা জানতে চান। ২৪ বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়, এতদিন তাঁর সংসার হাসিমুখে ধরে রেখেছিলেন তিনি।
[আরও পড়ুন : জঙ্গিদের বোমায় ছিন্নভিন্ন সদ্যোজাত শিশুরা, ক্ষোভে ফুঁসছে আফগানিস্তান]
বারবার স্ত্রীর কথা জানতে চাওয়ায় খানিকটা বাধ্য হয়েই চিকিৎসকরা জানান, মিনেটের মৃত্যু হয়েছে। লরেন্সকে জরুরি বিভাগে ভরতি হওয়ার পর আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন মিনেটও। স্বামীকে নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকে। তাঁর ৭২তম জন্মদিনের ঠিক একদিন আগে, ৭ এপ্রিল ঘুমের মধ্যেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মিনেটের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পরীক্ষায় দেখা যায়, করোনা হয়েছিল তাঁরও।
[আরও পড়ুন : ‘এ বিপদ হয়তো কোনওদিন যাওয়ার নয়’, করোনা নিয়ে ফের সতর্কবার্তা WHO’র]
লরেন্স এ কথা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। স্বাস্থ্যকর্মীদের তিনি জানিয়ে দেন, তিনি আর কোনওরকম ওষুধপত্র নেবেন না। এ ব্যাপারে সই করার কাগজপত্র চেয়ে পাঠান। বলেন, হাসপাতাল থেকে তাঁকে ছেড়ে দিতে হবে। এর পরের ৫ দিন ধরে ছেলেমেয়ে,
নাতি-নাতনিদের সঙ্গে দেখা করেন লরেন্স। বলে দেন, তাঁর জিনিসপত্রের কী বন্দোবস্ত হবে। এমনকী. বারবার ক্ষমাও চান তাঁদের কাছে, কারণ স্ত্রীর অসুস্থতার দায় এড়াতে পারছিলেন না তিনি। মিনেটের মৃত্যুর ৮ দিন পর মারা যান লরেন্সও।
The post সহমরণ! স্ত্রীর মৃত্যু হওয়ায় চিকিৎসা নিলেন না বৃদ্ধ, প্রাণ গেল তাঁরও appeared first on Sangbad Pratidin.