সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উলটে গেল পূর্বাভাস। বিশ্লেষকদের ‘গেল গেল’ রব থামিয়ে আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে দারুণ লড়াই করছে জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। বুধবার ফল ঘোষণা শুরু হতেই রিপাবলিকান শিবিরে উদ্বেগের মেঘ জমতে শুরু করে। শেষ পাওয়া তথ্য মোতাবেক, সেনেটে দুই দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে। তবে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে’ কিছুটা এগিয়ে রয়েছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল।
গতকাল, মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সেনেটের ১০০টির মধ্যে ৩৫টি এবং নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে’র ৪৩৫টি সাধারণ আসনের সবক’টিতেই ভোটগ্রহণ হয়। বিশ্লেষকদের দাবি ছিল, ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে’র দখল রিপাবলিকানদের হাতে চলে যেতে পারে। সেনেটের দখল বজায় রাখাও কঠিন হতে পারে ডোমোক্র্যাটদের পক্ষে। আর এমনটা হলে নতুন আইন পাশ করা বা ইউক্রেন যুদ্ধে (Ukraine war) আর্থিক প্যাকেজ পাশ করাতে কংগ্রেসে রীতিমতো হিমশিম খেতে হবে বাইডেন প্রশাসনকে। কিন্তু আদতে তা হয়নি।
[আরও পড়ুন: কাটল আইনি বাধা, নীরব মোদির ভারতে প্রত্যর্পণে সায় লন্ডন হাই কোর্টের]
বুধবার বিশ্লেষকদের ধারণা ভুল প্রমাণিত করে অন্য ছবি সামনে আসছে। এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডেমোক্র্যাট শিবির চাঙ্গা হতে শুরু করে। ‘দ্য গার্ডিয়ান’ সূত্রে খবর, সেনেটে ৪৮টি আসন পেয়েছে ডেমোক্র্যাটরা। রিপাবলিকানদের দখলে গিয়েছে ৪৭টি আসন। ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে’ রিপাবলিকানর পেয়েছে ১৯৯টি আসন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জয়ী হয়েছে ১৭২টি আসনে। দু’টি আসন গিয়েছে নির্দলদের দখলে। বলে রাখা ভাল, সেনেটে ম্যাজিক ফিগার হচ্ছে ৫১। আর ‘হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস’ দখলে রাখতে প্রয়োজন ২১৮টি আসনের। বেশ কয়েকটি আসনে এখনও ফল ঘোষণা শেষ হয়নি।
উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেরে অনেকটাই ব্যাকফুটে ছিলেন ট্রাম্প (Donald Trump)। ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় মামলার মুখে পড়া প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ভোটপ্রচারে ধারাবাহিক ভাবে হাজির ছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প আদৌ পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন কি না, তা রিপাবলিকানদের ফলাফলের উপর অনেকাংশে নির্ভর করবে বলেই ধারণা। ট্রাম্পের পাশাপাশি রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেত্রী রোনা ম্যাকড্যানিয়েলের কাছে এই ভোট আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন মুলুকে মধ্যবর্তী নির্বাচনে একটি বিশেষ ট্রেন্ড দেখা যায়। সাধারণত, আমেরিকায় যে দল ক্ষমতায় থাকে, মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসে তাদের আসন কমে যায়। সেই হিসাবে সেনেটে জমি দখলে রেখে বাইডেনের দল কিছুটা স্বস্তিতে। তাঁর নীতির পক্ষেই সায় দিয়েছে মানুষ। এই পরিস্থিতিতে ২০২৪-এর ভোটে ফের ট্রাম্প প্রার্থী হবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের মত।ইতিমধ্যে হতাশা প্রকাশ করে টুইটারে ট্রাম্পের ছেলে লিখেছেন ‘ব্লাড বাথ’। সবমিলিয়ে, আমেরিকায় ‘লাল ঝড়’ থমকে গিয়েছে বলেই ধারণা।