সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মহলের চাপ উপেক্ষা করেই রাফায় ঢুকে পড়েছে ইজরায়েলের ট্যাঙ্কবাহিনী। দক্ষিণ গাজার এই শহরে হামাস জঙ্গিদের ডেরা লক্ষ্য করে চলছে হামলা। যার ফলে বিপন্ন সেখানে থাকা লক্ষ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়ের জীবন। যা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকা। রাফায় ঢুকে অভিযান শুরু করার আগে থেকেই ইজরায়েলকে সাবধান করেছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু কোনও কথাতেই কর্ণপাত করেনি তেল আভিভ। তাই এবার রাফাকে 'ধ্বংসে'র হাত থেকে বাঁচাতে ইজরায়েলকে অস্ত্রের সরবরাহ স্থগিত করল মার্কিন প্রশাসন।
প্রায় দুদিন হয়ে গিয়েছে। প্যালেস্তিনীয়দের 'শেষ আশ্রয়' রাফায় ঢুকে আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোটাছুটি করছেন সাধারণ মানুষ। শরণার্থীরাও ক্যাম্প ছেড়ে পালাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে, হোয়াইট হাউসের এক প্রশাসনিক আধিকারিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, "রাফায় ঢুকে ইজরায়েলি সেনার অভিযান উচিত ছিল না। সবার আগে ভাবা দরকার ছিল ওটা নিরীহ প্যালেস্তিনীয়দের শেষ আশ্রয়। এর বাইরে তাঁদের আর যাওয়ার কোনও জায়গা নেই। লক্ষ লক্ষ শরণার্থীরাও সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। তাই ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা স্থগিত রাখা হয়েছে। অস্ত্র দেওয়া নিয়ে ফের আলোচনা চলছে।"
বলে রাখা ভালো, গত ৭ অক্টোবর হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে ইজরায়েলের পাশে রয়েছে ওয়াশিংটন। প্রথম থেকে হাতিয়ার দিয়ে ইহুদি দেশটিকে সাহায্য করছে মার্কিন প্রশাসন। কিন্তু গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের মৃত্যুমিছিল নিয়ে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে সরবও হয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু এর মাঝেও কয়েকদিন আগেই তেল আভিভকে বিরাট পরিমাণে গোলা-বারুদ সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু রাফায় ঢুকে ইজরায়েল অভিযান শুরু করতেই সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে আমেরিকা।
উল্লেখ্য, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হয়েছিল হামাস। কিন্তু প্রয়োজনীয় দাবি মানা হয়নি বলে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেয় ইজরায়েল। গত রবিবার রাফার দুটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের এলাকা খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল ইজরায়েলি ফৌজ। তার পরই সেখানে হামলা চালায় তেল আভিভ। মঙ্গলবার রাফায় প্রবেশ করে ইজরায়েলের ট্যাঙ্কবাহিনী। ইতিমধ্যে রাফা বর্ডার ক্রসিংয়ের প্যালেস্তিনীয় অংশ দখল করে নিয়েছে তারা। এই বিষয়ে মঙ্গলবার সকালেই ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস এক্স হ্যান্ডেলে জানায়, ‘আইডিএফ এই মুহূর্তে দক্ষিণ গাজার রাফা শহরে হামলা চালাচ্ছে। পূর্ব রাফায় হামাস ডেরাগুলো নিশানা করে আক্রমণ শানানো হচ্ছে।’ ফলে ফের সাধারণ মানুষের প্রাণহানি নিয়েই এখন গভীর উদ্বেগে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। কারণ এই মুহূর্তে রাফায় প্রায় ১৫ লক্ষ প্যালেস্তিনীয়র বাস রয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই শরণার্থী।