সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিহত সেনাকর্তা কাশেম সোলেমানির হত্যার বদলা নিতে হামলা চালাতে পারে ইরান। আগামী ৩ জানুয়ারি ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডারের মৃত্যুবার্ষিকী। ওইদিনই মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাঘাঁটিগুলিতে আক্রমণ শানাতে পারে ইরানের বাহিনী। এমনটাই আশঙ্কা করে পালটা হামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আমেরিকা (USA)।
[আরও পড়ুন: তাইওয়ান প্রণালীতে চিনা নৌবহর, পালটা রণতরী মোতায়েন করল তাইপেই]
সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে এক গোপন ঘাঁটি থেকে ফোনে সাংবাদিকদের একটি সাক্ষাৎকার দেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের (Centcom) প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি। প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “যেকোনও ধরনের হামলার জবাব দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত। মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের সহযোগীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ও প্রয়োজনে হামলাকারী ইরান ও ওই দেশের মদতদাতাদের উপর পালটা হামলা চালাতে আমরা সম্পূর্ণ সক্ষম। আমার কমান্ডারদের সঙ্গে রোজ কথা হচ্ছে। তাঁরা সম্পূর্ণ তৈরি।” তিনি আরও জানান, সম্প্রতি বাগদাদ গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসদমন বাহিনীর প্রধান মার্কিন জেনারেল পল কালভার্ট ও ইরাকের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদুল আমির ইয়ারাল্লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। জেনারেল ম্যাকেনজি সিরিয়া সফরের কথাও জানান সাংবাদিকদের।
প্রসঙ্গত, গত বছরই ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তারপর মধ্যপ্রাচ্যে অনেকটাই পালটেছে সমীকরণ। ইরানের আণবিক কর্মসূচী ও সংঘাতের ক্রমবর্ধমান আশঙ্কার দরুন ইরাকে নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে বাধ্য হয়েছে মার্কিন ফৌজ। ২০২০ অর্থাৎ চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি সোলেমানিকে হত্যা করা হয়েছিল। তাই ওই দিন ইরান হামলা চালালে, পালটা হামলার প্রস্তুতিতে পারস্য উপসাগরে টহল দিচ্ছে মার্কিন এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ার ইউএসএস নিমিৎজ (USS Nimitz)। আকাশে টহল দিয়েছে দুটি মার্কিন বোমারু বি-৫০ বিমান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মার্কিন ড্রোন হানায় মৃত্যু হয় জেনারেল কাশেম সোলেমানির। বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কিছুক্ষণ পরই সোলেমানির গাড়িতে আছড়ে পড়ে একের পর এক মিসাইল। একাধিক গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, সোলেমানিকে নিকেশ করেছে অত্যাধুনিক মার্কিন ড্রোন ‘MQ-9 Reaper’। একবার জ্বালানি ভরে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কিলোমিটার পর্যন্ত হামলা চলতে সক্ষম এই চালকবিহীন বিমানটি। ‘MQ-9 Reaper’ ড্রোনটির সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে ৪৮২ কিলোমিটার প্রতিঘণ্টা। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ক্যামেরা, যা রাতেও যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি পরিষ্কার পাঠিয়ে দেয় সুদূর ঘাঁটিতে বসে থাক চালকের মনিটরে। মার্কিন বাযুসেনার এই ড্রোনটির প্রধান অস্ত্র ‘GBU-12 Paveway II’ লেসার গাইডেড বম্ব ও ‘AGM-114 Hellfire II’ ও ‘AIM-9 Sidewinder’ মিসাইল। পেন্টাগনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, সোলেমানির কনভয়ে ‘Hellfire II’ মিসাইল দিয়ে হামলা চালিয়েছিল মার্কিন ড্রোন।