সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পেরিয়ে গিয়েছে আড়াই বছরেরও বেশি সময়। এখনও থামেনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। হামলা পালটা হামলা, মৃত্যুমিছিল সব কিছুই বজায় রয়েছে। আমেরিকার হাতিয়ারে বলীয়ান হয়ে মস্কোকে পালটা মার দিচ্ছে কিয়েভ। তাই রণক্ষেত্রে রুশ ফৌজের শক্তি বাড়াতে সেনা পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া! ইতিমধ্যে পূর্ব রাশিয়ায় পৌঁছে গিয়েছে ৩ হাজার সৈন্য। এমনটাই দাবি হোয়াইট হাউসের।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকার চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে রাশিয়ায় গিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কিম জং উন। বৈঠক করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। তখনই যুদ্ধের ময়দানে মস্কোকে নিঃশর্তভাবে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন কিম। সেই থেকেই জল্পনা, ইউক্রেন যুদ্ধ আবহে দুদেশের মধ্যে অস্ত্র চুক্তি হয়েছে। এর আগেও কিমের দেশের বিরুদ্ধে ক্রেমলিনকে অস্ত্র দেওয়ার অভিযোগ এনেছে আমেরিকা। সম্প্রতি হোয়াইট হাউস দাবি করে, প্রায় হাজারের উপর সামরিক অস্ত্র বোঝাই কন্টেনার পিয়ংইয়ং থেকে গিয়েছে মস্কোতে। এবার আমেরিকার দাবি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সেনা পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা সংযোগ উপদেষ্টা জন কিরবি বলেন, "কয়েকটি রিপোর্ট থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে, অক্টোবর মাসেই রাশিয়ার পূর্ব অঞ্চলে কমপক্ষে ৩ হাজার সেনা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। রাশিয়ার সেনা ঘাঁটিতে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের অনুমান, এই সৈন্যরা ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করবে। গোটা পরিস্থিতির উপর আমরা তীক্ষ্ণ নজর রাখছি। এই বিষয়ে ইউক্রেনের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা চলছে।" ফলে ফের একবার উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সংঘাত তীব্র হয়েছে আমেরিকার। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ওয়াশিংটনের জোট মাথাব্যথার কারণ কিমের।
উল্লেখ্য, 'বন্ধু' কিমের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে চলতি বছরের জুন মাসে উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। দীর্ঘ আলোচনার পর সামরিক চুক্তি স্বাক্ষর করেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। চুক্তি অনুযায়ী, রাশিয়ায় হোক কিংবা উত্তর কোরিয়ায়, অন্য দেশ আক্রমণ শানালেই একে অপরের পাশে দাঁড়াবেন পুতিন ও কিম। নাম না করলেও যে দুজনের ইঙ্গিত আমেরিকার দিকেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। কারণ ইউক্রেন যুদ্ধে কিয়েভের পাশে রয়েছে আমেরিকা। আবার কিমের দেশের সঙ্গেও ‘শত্রুতা’র অন্ত নেই ওয়াশিংটনের। সমর বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার কিমের সেনার আগমন ইউক্রেনের পাশাপাশি কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে আমেরিকাও। কারণ এবার দুদেশের যৌথ বাহিনী আক্রমণ শানাতে তাদের উপরেও। তবে শত্রুপক্ষকে কড়া জবাব দিতে প্রস্তুত মার্কিন সেনাও। এদিকে, আগামী দিনে ইউক্রেন যুদ্ধের ময়াদনে উত্তর কোরিয়ার সেনাকে দেখা যায় কিনা সেদিকেই নজর থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।