সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গণতান্ত্রিক সরকার উপড়ে ফেলে মায়ানমারের দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। বন্দি জনপ্রিয় নেত্রী আং সাং সু কি ও তাঁর বিশ্বস্ত সহযোগীরা। ফলে সেনার স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার গণতন্ত্রকামী মানুষ। এহেন পরিস্থিতিতে বিক্ষোভ থামাতে ‘মার্শাল ল’ চলছে দেশটিতে। তবে শক্তিপ্রয়োগ করে ক্ষমতা দখল করলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে হয়ে পড়েছে বার্মিজ সেনা। সেই চাপ আরও বাড়িয়ে এবার মায়ানমারের জনগণের পাশে থাকার বার্তা দিল আমেরিকা।
[আরও পড়ুন: সেনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে একমনে নাচে মগ্ন মায়ানমারের সাহসিনী! ভাইরাল ভিডিও]
গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ মায়ানমারের দখল নেয় সর্বশক্তিমান ‘জুন্টা’। সামরিক বাহিনীর হাতে বন্দি হন নোবেলজয়ী রাষ্ট্রপ্রধান আং সান সু কি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট-সহ অনেকেই। সেনা জানায়, আপাতত এক বছরের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে তারা। অভ্যুত্থানের পক্ষে সেনাবাহিনীর যুক্তি, বিগত নির্বাচনে বিস্তর কারচুপি হয়েছে। তাই করোনা আবহে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। বলে রাখা ভাল, গত বছর বিরোধীদের পরাজিত করে ক্ষমতায় ফিরেছে আং সান সু কি’র (Aung San Suu Kyi) দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (NLD)। মায়ানমার সংসদের নিম্নকক্ষের ৪২৫টি আসনের মধ্যে ৩৪৬টিতে জয়ী হয় তারা। কিন্তু, রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে শুরু করে একাধিক বিষয়ে বিগত দিনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় সু কি সরকারের।
এদিকে, অভ্যুত্থানের পর আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে হয়ে পড়েছে বার্মিজ সেনা। চিন ছাড়া প্রায় সব দেশই দ্রুত সু কি’র মুক্তির দাবি জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজধানী নাইপিদাও, ইয়াঙ্গন-সহ বেশ কয়েকটি শহরে সু কি’র সমর্থনে রাস্তায় নেমে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। বিক্ষোভ রুখতে কার্ফু জারি করেছে সেনা। ফেসবুক, টুইটার-সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এক জায়গায় পাঁচজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
মায়ানমারে ক্রমে জটিল হয়ে ওঠা পরিস্থিতির বিষয়ে মার্কিন বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, “আমরা বার্মার জনগণের পাশে আছি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারের পক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে সমর্থন দেখানোর সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের। দেশটির সেনাবাহিনী প্রতিবাদ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। তা নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।” বিশ্লেষকদের মতে, মায়ানমারের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে আমেরিকা। বিশেষ করে সে দেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তাদের নিশানা করতে পারে ওয়াশিংটন। তবে এহেন চাপের মুখেও চিন পাশে থাকায় নিকট ভবিষ্যতে সু কি’র মুক্তির সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেও চলে।