দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Vishva Bharati) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে নিয়ে একাধিক বিতর্ক রয়েছে। মাঝেমধ্যেই বেফাঁস মন্তব্য করে তিনি উঠে আসেন খবরের শিরোনামে। এবার তাঁকে নিয়ে যথেষ্ট ক্ষোভ উগরে দিলেন বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক তথা বিজেপির সর্বভারতীয় কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা (Anupam Hazra)। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ”উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীকে সমালোচিত হতে হয়।” বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতনে (Santiniketan) বিশ্বভারতীর আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর ও স্ত্রী শুভ্রা ঠাকুরের বাসভবনে একাধিক বিষয় সম্পর্কে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা। সেখানেই উপাচার্যের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
অনুপম হাজরার বক্তব্য, ”উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রীকে সমালোচিত হতে হয়। এখানকার পঠনপাঠন গুণগতমান সর্বভারতীয় স্তরে দিনদিন তলানিতে ঠেকেছে। বিশ্বভারতীকে আগের মতো পূর্ণ গরিমায় ফিরিয়ে আনতে হবে।” বোলপুরের প্রাক্তন সাংসদের কথায়, ”এই উপাচার্যের সময় কালেই বসন্ত উৎসব, পৌষ মেলা-সহ শান্তিনিকেতনের প্রধান আকর্ষণ, অনুষ্ঠান সব কিছুই এখন বন্ধ। যা প্রাক্তনী, পড়ুয়া, আশ্রমিক ও বোলপুর-শান্তিনিকেতনবাসীর কাছে আবেগে আঘাত করে। ঠাকুর পরিবারের সদস্য সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রপৌত্র সুপ্রিয় ঠাকুর-সহ প্রবীণ আশ্রমিকদেরও ব্রাত্য করে রেখেছেন বর্তমান উপাচার্য। তিনি নিজেকে ‘অতি বিজেপি’ প্রমাণ করার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন। সুপ্ত বাসনা, রাজ্যপাল হওয়ার বা উপাচার্যের মেয়াদকাল বৃদ্ধি করার প্রবল তাগিদ থেকেই। ঐতিহ্যময় প্রতিষ্ঠানে অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিস্থিতিকে আর বেশিদিন প্রশ্রয় দেওয়া সমীচীন নয়।”
[আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে চাইলে বেশি মদ খাওয়া ছাড়ুন’ ইটালির প্রধানমন্ত্রীর স্বামীর মন্তব্যে বিতর্ক]
অন্যদিকে, প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন,”বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র এবং প্রাক্তন অধ্যাপক অনুপম হাজরা বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে সদিচ্ছা দেখিয়েছেন। উৎসাহ, দেখাশোনার দায়িত্ব নিচ্ছেন। এটা শুনেই আনন্দিত হয়েছি। আশা করব, ভবিষ্যতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই সদর্থক ভূমিকা পালন করবেন।” ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সামনেই লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024)। তাঁর আগেই বিশ্বভারতীকে কেন্দ্র করে বারবার বিতর্কের দানা বেঁধেছে। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের জমি বিতর্ককে কেন্দ্র করেও অস্বস্তি বেড়েছে বিজেপির (BJP)। তাই বাধ্য হয়েই বিশ্বভারতী প্রসঙ্গে সুর নরম করার চেষ্টা করছেন অনুপমরা। অন্যদিকে মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ”অত্যন্ত কৌশলে উপাচার্যের ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে বিজেপি। বিশ্বভারতীর সব কিছু বন্ধ করে দিয়ে বিজেপি নাটক করছে।”