স্টাফ রিপোর্টার: ডিভিসির ছাড়া জলে প্লাবিত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার চাষের জমি জলের তলায়। আর তারই প্রভাব পড়তে শুরু করেছে সবজি বাজারে। বাড়তে শুরু করেছে অধিকাংশ সবজির দাম। একশ্রেণির ফড়ে এই সুযোগেই কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াতে শুরু করেছে। যার জেরে শনিবার থেকেই কাঁচা সবজি, আনাজপাতি কিনতে গিয়ে হাত পুড়ছে মধ্যবিত্তের। শনিবার একাধিক জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা। সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে টাস্ক ফোর্সকেও নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ফের এবিষয়ে বৈঠক করতে পারেন। বিক্রেতাদের দাবি, জোগান কম থাকায় গত দুদিনের মধ্যে সবজি-আনাজপাতির দাম কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা করে বেড়েছে। পুজোর সময় আরও দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। আগামী সপ্তাহে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। তবে কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, হাওড়া, হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় থাকায় সেখানকার সবজি নষ্ট হয়েছে ঠিকই, কিন্তু শহরে দুই চব্বিশ পরগনা, নদিয়া থেকেও প্রচুর সবজি আসে। ফলে এখনই দাম বাড়ার কথা নয়। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী নিজেদের মতো করে দাম বাড়িয়ে নিয়েছেন। যে সবজি হাটে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে শনিবারও তাই বাজারে এসে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা থেকে শুরু করে হুগলির ধনেখালি, পুরশুড়া, আরামবাগে চাষের জমিতে হাঁটুসমান জল জমে গিয়েছে। এর ফলে অনেক জায়গাতেই মাঠের ফসল মাঠেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাইকারি বাজারে হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে প্রতিদিন ছোট ছোট লরিতে নানা ধরনের সবজি আসে। বন্যার কারণে হাওড়া পাইকারি সবজি বাজারে সবজির জোগান অনেকটাই কমে গিয়েছে।
বাজারে সবজির জোগান কমে যাওয়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পটল, ঝিঙে, কাঁচালঙ্কা, টম্যাটো, কুমড়ো, করলা, বরবটি, বেগুন, ঢেঁড়শ, লাউ, ওল, বাঁধাকপি, কচুর মতো নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম। খুচরো বিক্রেতারাও জানিয়েছেন, পাইকারি দামের উপর কেজি প্রতি আরও ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বাড়িয়ে তা খুচরো বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের সবজি বিষয়ক টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘‘হাওড়া-হুগলিতে চাষের জমি জলের তলায়। কিন্তু দুই চব্বিশ পরগনা, নদিয়া থেকে যে সবজি আসে তাতে কোনও প্রভাব পড়েনি। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।’’