অর্ণব আইচ: উৎসব শেষ হতে হতে গভীররাত। নাইটক্লাব ও পানশালায় হুল্লোড়। রাতটা যে বর্ষবরণের। সবার মুখে ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’।
উৎসবের মধ্যেই হুশ করে চোখের সামনে দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বেপরোয়া বাইকের। চালক বা আরোহী কারও মাথায় নেই হেলমেট। এতেই আপত্তি পুলিশের। বর্ষবরণের রাতে পুলিশের নজরে সেই মদ্যপ বাইক চালক। গভীররাতে যাতে পানশালা থেকে বেরনোর পর কেউ রাস্তায় ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানি না করে, তার জন্য থাকছে পুলিশের বিশেষ নজরদারি। আর রোমিও ধরতে সারারাত থাকছে মহিলা পুলিশের বিশেষ টিম ‘উইনার্স’।
[মেট্রোয় অগ্নিকাণ্ডের পুনর্নির্মাণ সিআরএস-র, আর্থিক সাহায্য ঘোষণা রেলের]
পার্ক স্ট্রিট বা শেক্সপিয়র সরণি তো রয়েছেই। তাছাড়াও শহরের বহু জায়গায় রাত এগারোটা থেকেই শুরু হয়ে যায় বর্ষবরণের উৎসব। রাতে বাইপাস-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় হোটেল ও পানশালা থেকে মদ্যপান করে বের হবেন অনেকে। পুলিশের ধারণা, রাতে বেপরোয়া বাইক চালানোর প্রবণতা থাকে বহু যুবকের। মাথায় থাকে না হেলমেট। এছাড়া বহু গাড়ির চালক মদ্যপান করে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গাড়ি চালাতে পারেন বলে ধারণা পুলিশের। তাই মদ্যপ চালক রুখতে রাতে পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি ছাড়াও শহরের বহু রাস্তায় গার্ডরেল বসিয়ে ‘ব্রেথ অ্যানালাইজার’ দিয়ে চালকদের পরীক্ষা করা হবে। অতিরিক্ত মদ্যপান করে গাড়ি চালালে চালককে ধরা হলে তাঁকে সারারাত থানার লকআপেও থাকতে হতে পারে। তাই পার্ক স্ট্রিটের পানশালার সঙ্গে সঙ্গে শহরের অন্যান্য এলাকার পানশালাগুলির উপরও কড়া নজর থাকছে পুলিশের। ইতিমধ্যে শহরের প্রত্যেকটি পানশালাকেই পুলিশ সতর্ক করেছে যাতে রাতে মদ্যপ অবস্থায় পানশালার ভিতর ও বাইরে কেউ গোলমাল না করেন। পানশালা কর্তৃপক্ষকে বলে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের কর্মীরাও যেন খদ্দেরদের দিকে নজর রাখেন। কেউ যদি পানশালার ভিতরে কোনও অপরিচিত মহিলাকে কটূক্তি করেন, তখনই যেন তাঁকে সতর্ক করা হয়। বিষয়টি যাতে পানশালার বাইরে না যায়, তার জন্যই এই সতর্কতা। তবে আরও বড় কোনও ঘটনা হলে পানশালা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি পুলিশকে জানাতে বলা হয়েছে। একইভাবে সতর্ক করা হয়েছে শহরের নাইটক্লাবগুলিকেও। শহরের বিভিন্ন আবাসন চত্বর ও বাড়ির ছাদেও রুফটপ পার্টির আয়োজন করা হয়। বেআইনিভাবে যাতে এই পার্টি না হয়, সেদিকে আবগারি দপ্তরের গোয়েন্দা ও পুলিশের নজরদারিও রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী, বর্ষবরণের রাত পৌঁনে বারোটা থেকে সোয়া বারোটা পর্যন্ত আতসবাজি ফাটানো যাবে। সুপ্রিং কোর্টের নিয়ম যাতে লঙ্ঘন না হয়, সেদিকেও চলছে পুলিশের নজরদারি।
[শেষ হল ‘অক্লান্ত পদাতিক’-এর পথচলা, শোকের ছায়া চলচ্চিত্র জগতে]
বড়দিন থেকেই সেজে উঠেছে পার্ক স্ট্রিট। বর্ষবরণের রাতেও মানুষের ভিড়ের একটি বড় অংশ কেন্দ্রীভূত হবে পার্ক স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণি এলাকায়। রাত বারোটার আগে থেকেই পার্ক স্ট্রিটে হাঁটবে মানুষ। একে অন্যকে জানাবেন নতুন বছরের শুভেচ্ছা। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে পার্ক স্ট্রিট দিয়ে যানবাহন চলবে। যদি দেখা যায়, মানুষের ভিড় এতটাই বেশি হয়েছে যে, অতিরিক্ত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, তখনই পার্ক স্ট্রিট দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এছাড়াও সোমবার রাতে পার্ক স্ট্রিট মুড়ে ফেলা হচ্ছে নিরাপত্তার চাদরে। পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে শহরের পদস্থ পুলিশকর্তারা ভোররাত পর্যন্ত রাস্তায় থাকবেন। জনতার মধ্যে ঘুরবে সাদা পোশাকের পুলিশও। ইভটিজিং বা শ্লীলতাহানি রুখতে থাকছে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশের বিশেষ টিমও। কেউ মদ্যপান করে বেলেল্লাপনা বা ইভটিজিং করলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
The post পার্ক স্ট্রিট থেকে বাইপাস, আজ পুলিশের নজরবন্দি বর্ষবরণ উৎসব appeared first on Sangbad Pratidin.