সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইসলাম ধর্মকে অবমাননার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া খ্রিস্টান যুবতী আসিয়া বিবি বেকসুর খালাস হতেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল পাকিস্তান। জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল উগ্রবাদী সংগঠনগুলির হাজার হাজার সমর্থক। এমনকি সংবাদ মাধ্যম ও পুলিশকেও আক্রমণ করল কট্টরপন্থীরা। ক্যামেরা ও গাড়িতে চলে ভাঙচুর। বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে চলল বেধড়ক মারধর। পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে বৃহস্পতিবার দিনভর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনার জেরে আসিয়াকে পাকিস্তানের বাইরে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে সরকার।
[নির্বাচনে চিন-রাশিয়া-ইরানের হস্তক্ষেপের আশঙ্কা, প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের]
জানা গিয়েছে, পাক সরকারের কাছে আবেদন করেছেন আসিয়ার স্বামী আশিক ম্যাসি। তিনি ব্রিটেনে ফলের ব্যবসা করেন। তিনি স্ত্রী আসিয়া ও সন্তানদের নিয়ে পাকাপাকিভাবে পাকিস্তান ছেড়ে চলে যেতে চান। আসিয়াকে নিয়ে পাকিস্তান ছাড়তে চাওয়ায় তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেছে পাক সরকার। কিন্তু বাদ সেধেছে তেহরিক-ই-লাবাইক ও বেশ কয়েকটি কট্টরপন্থী দল। তাদের দাবি, এখনই আসিয়াকে ফাঁসিতে ঝোলাতে হবে। তাঁকে দেশ ছাড়তে দেওয়া চলবে না। আসিয়ার স্বামীর দাবি, তাঁর স্ত্রী জেল থেকে ছাড়া পেলেই তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে পাকিস্তানের মুসলিম জনতা। পাকিস্তানে ধর্মের অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এমনটাই বলছে সে দেশের আইন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বুধবার এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়ে দেয়, উপযুক্ত প্রমাণ না থাকায় আসিয়া বিবিকে বেকসুর খালাস করা হল। আট বছর আগে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসিয়াকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি মির সাকিব নিসার।
২০০৯ সালের জুনের ঘটনা। শেখপুরা এলাকায় গাছ থেকে ফল পাড়তে গিয়ে অন্য মহিলাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় চার সন্তানের জননী আসিয়া বিবির। প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেন, মহম্মদকে অপমান করেছেন আসিয়া। এই অভিযোগে ২০১০ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাকিস্তানের নিম্ন আদালত। গত ৮ বছর ধরে তাঁকে কারাগারের অন্ধকার সেলের ভিতর দিন কাটাতে হচ্ছে। বার বার নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন আসিয়া। তাঁর দাবি, তিনি খ্রিস্টান বলে তাঁর হাতে জল খেতে অস্বীকার করেন প্রতিবেশীরা।
[নীল নির্জনে ডুবছে কৈশোর, চিন্তায় শহরের মনোবিদরা]
The post মহম্মদকে ‘অপমানে’ অভিযুক্ত আসিয়ার মুক্তিতে মৌলবাদীদের তাণ্ডব পাকিস্তানে appeared first on Sangbad Pratidin.