বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: রাত পোহালেই শ্রী পঞ্চমী। বসন্ত ঋতুর সূচনাকাল। পলাশপ্রিয়ার আরাধনায় মাতবে বাঙালি। করোনাকালের লকডাউনের যন্ত্রণা কেটেছে কয়েক বছর হয়েছে। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে জীবন। তাই বাগদেবী আরাধনাতেও বাধন ছেড়া উচ্ছ্বাস। তবে এবারও থাকছে ভারচুয়াল অঞ্জলির আয়োজন। সেটা অবশ্য করোনাতঙ্কে নয়। দেশের বিভিন্ন রাজ্য তো বটেই, বিদেশে পাড়ি জমানো ঘরের ছেলেমেয়েদের দেবীর আশীর্বাদের সুযোগ করে দিতে ওই ব্যবস্থা। তারা জুম অ্যাপে লগ ইন করে অথবা ভিডিও কলে বুধবার পুজো দেখবেন। অঞ্জলিও দেবেন।
করোনাকাল থেকেই মূলত পুজোয় ভারচুয়াল অঞ্জলি অথবা অনলাইন অঞ্জলির জনপ্রিয়তা। পুরোহিত পুজো করেছেন। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ে পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে দেওয়া হয়নি। তখন অনলাইনে প্রত্যেকে বাড়িতে বসে পুজো (Saraswati Puja 2024) দেখার সুযোগ পেয়েছে। অঞ্জলিও দিয়েছে। করোনাসুরের দাপট কমলেও ভারচুয়াল অঞ্জলির প্রথা রয়েই গিয়েছে। এখন লেখাপড়ার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অথবা প্রবাসে থাকা পড়ুয়াদের জন্য চালু রয়েছে বঙ্গীয় পুরোহিত ও যজমান সংঘ। সংস্থার সভাপতি জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “মূলত পারিবারিক পুজোতেই ওই ব্যবস্থা থাকছে। পরিবারের লোকজন বাইরে থাকা ছেলেমেয়েদের অনলাইনে পুজো দেখা এবং অঞ্জলির ব্যবস্থা করছেন।”
[আরও পড়ুন: জঙ্গলে হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা আলিয়ার! ভিডিও দিয়ে নিজেই জানালেন ভয়ংকর সত্যিটা]
তিনি জানান, সোমবার সকাল পর্যন্ত সংস্থার সদস্য পুরোহিতদের সূত্রে যতটুকু খবর মিলেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে এবার উত্তরে অন্তত সাড়ে তিনশো পরিবারে ভারচুয়াল অঞ্জলির ব্যবস্থা থাকবে। ক্যালিফোর্নিয়া, লন্ডন, স্কটল্যান্ড, বেলজিয়ামে বসে ৪২ জন ভারচুয়ালি পুজো দেখবেন। অঞ্জলি দেবেন।
কিন্তু লন্ডনে বসে যিনি অঞ্জলি দেবেন, তাঁর সামনে কি দেবী সরস্বতীর ছবি থাকে? অঞ্জলি দিতে তিনি পলাশ ফুল, যবের শিষ পাবেন কোথায়! ভারতীয় সময়ের সঙ্গে বিদেশের সময় কেমন করে মেলানো হয়! বঙ্গীয় পুরোহিত ও যজমান সংঘের সভাপতি জানান, সরস্বতীর ছবির প্রয়োজন হবে না। মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটারের স্ক্রিনে দেবী ছবি-সহ পুজোর সবটাই দেখার সুযোগ পাবে। বাড়ির লোকেরা ওদের ফুল রাখতে বলেন। পুরোহিতরা ধীরে ধীরে মন্ত্রোচ্চারণ করেন। ওরা পুরোহিতের সঙ্গে তা বলে মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটারের স্ক্রিনের সামনে ফুল রেখে দেয়। তবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সময় মেলানো নিয়ে পুরোহিতরা বিড়ম্বনায় আছেন। জয়ন্তবাবু বলেন, “সকালে বাড়িতে পুজো হচ্ছে অথচ ছেলেমেয়ে যে দেশে থাকেন সেখানে মধ্যরাত। কিছুই করার নেই। মানিয়ে নিতে হচ্ছে।”