সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গতকালই গুজরাতের কচ্ছে সফলসঙ্গী হয়েছিলেন আপনি৷ গুজরাত ভ্রমণে তাই বাকি সফরটুকুও আপনাদের সঙ্গী করলাম৷ গুজরাত বেড়াতে যাবেন আর সোমনাথ দর্শন করবেন না, এমনটাও কি হতে পারে? তাই গুজরাত সফরে সোমনাথ দর্শন যেন একপ্রকার বাধ্যতামূলক৷
ভারতের শিবতীর্থগুলির মধ্যে অন্যতম এই তীর্থটির নাম বহু প্রাচীনকাল থেকেই সর্বজনবিদিত৷ সোমনাথ পর্যটকমহলে প্রভাসতীর্থ নামেও পরিচিত৷ দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম হল সোমনাথ৷ চালুক্যরাজাদের তৈরি সোমনাথ মন্দির ছিল বহু মুল্যবান রত্ন আর সোনাদানার বিপুল ভাণ্ডার৷
প্রাচীন এই মন্দির ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস৷ শোনা যায়, সোমনাথ মন্দিরের স্বর্ণভাণ্ডারের তার লোভেই গজনির সুলতান মামুদ ১০২৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে বহুবার এই মন্দির আক্রমণ করেছিলেন৷ মন্দিরের রত্নরাজি লুন্ঠন করেন তিনি৷ এরপর ইন্দোরের রানি অহল্যাবাঈ নতুন করে এই মন্দির তৈরি করেন৷ ১৯৫১ সালে সর্দার প্যাটেলের সহযোগিতায় মন্দিরের আমূল সংস্কার করা হয়৷
সাগরতীরে গড়ে ওঠা অনবদ্য কারুকার্যশোভিত মন্দিরের মধ্যে রয়েছেন স্বয়ম্ভু শিব৷ দেবতা এখানে সোমেশ্বর মহাদেব৷ মন্দিরের প্রধান ফটক দিগ্বিজয়দ্বার দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করতে হবে৷ মন্দিরের মধ্যে পুরনো মন্দিরের বেশ কিছু ছবিও রয়েছে৷ কিন্তু মন্দিরের এই সৌন্দর্য্য কেবল মনের ক্যামেরাতেই ফ্রেমবন্দি করে রাখতে পারবেন আপনি৷ কারণ মন্দির চত্বরের মধ্যে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ৷
মন্দিরের কাছেই রয়েছে প্রাচীন মন্দিরের শিল্পসমৃদ্ধ ধ্বংসাবশেষ নিয়ে সংগ্রহশালা৷
এরপর সোমনাথ মন্দিরের সামনে থেকে একটা অটো বা টাঙা ভাড়া নিয়ে চলুন সারদামঠ, পরশুরামের তপস্যাস্থল, সূর্যমন্দির, ত্রিবেণীঘাট, শঙ্করাচার্য মন্দির প্রভৃতি৷
এরপরের গন্তব্য সোমনাথের আরেক আকর্ষণ সরস্বতী, কপিলা ও হিরণ্য এই তিন নদীর সঙ্গমস্থল প্রভাসতীর্থ বা ত্রিবেণীতীর্থ৷ শ্রীকৃষ্ণের চরণস্পর্শ ধন্য প্রভাসতীর্থে পুণ্যস্নানের জন্য তীর্থযাত্রীদের ভিড় লেগেই থাকে৷ এর কাছেই রয়েছে শ্রীকৃষ্ণের সমাধিমন্দির গীতাভবন৷ এখানেই জরা নামের এক ব্যাধ হরিণ ভেবে ভুলবশত শ্রীকৃষ্ণকে তিরবিদ্ধ করে এবং এখানেই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দেহত্যাগ করেন৷
যাওয়া এবং থাকা
হাওড়া থেকে সরাসরি আমেদাবাদ ট্রেন যাচ্ছে৷ সেখান থেকে প্রতিদিন সোমনাথ মেল ও গিরনার এক্সপ্রেস যাচ্ছে সোমনাথের আগের স্টেশন ভেরাবলে৷ ভেরাবল থেকে ৫ কিমি দূরে সোমনাথ৷ ভেরাবল থেকে আমেদাবাদ ৪৩১ কিমি৷ জুনাগড় থেকে ৯০ কিমি ও দ্বারকা থেকে ২৫০ কিমি দূরে সোমনাথ৷
সোমনাথ মন্দিরের কাছেই রয়েছে মন্দির কমিটির অনেকগুলি গেস্ট হাউস৷ এখানে থাকার ভাল ব্যবস্থা রয়েছে৷ এখানে মান অনুযায়ী ডাবল বেডের ভাড়া ৫০০-১৫০০ টাকার মধ্যে৷ যোগাযোগ করবেন ০২৮৭৬ ২৩৩৫৩৩/০৯৪২৮২১৪৯১৪৷ ড্রাফ ও চিঠি লেখার ঠিকানা৷ জেনারেল ম্যানেজার, শ্রী সোমনাথ ট্রাস্ট৷ সোমনাথ প্রভাস পাটন-৩৬২২৬৮৷ ই-মেল somnathdl@sanchernet.in ৷ গেস্ট হাউস সুপারভাইজার ০৯৪২৮২১৪৯১১ ৷ এ ছাড়াও আছে প্রভাস গেস্ট হাউস, ময়ূরম, শিবম প্রভৃতি বেসরকারি হোটেল৷ এখানে ১০০০-২৫০০ টাকায় ডাবল বেডের ঘর মিলবে৷ ভেরাবলের কলেজ রোডে রয়েছে গুজরাত টুরিজমের তোরণ হলিডে হোম৷
The post ইতিহাস ও ধর্মের মিলনক্ষেত্র সোমনাথ appeared first on Sangbad Pratidin.