ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতী (Visva Bharati) বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটাতে এবার উপাচার্যের উপর চাপ বাড়াল বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি (ABVP)। তাদের সাফ দাবি, এভাবে বিশ্বভারতীর কাজ স্তব্ধ করে দেওয়া যাবে না। বরং ছাত্রছাত্রীরা যে কারণে আন্দোলন, বিক্ষোভ করছেন, তাঁদের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করে সমাধান করুন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
যদিও তিনি আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনার পথে হাঁটবেন না। তবে ABVP’র চাপের কাছে সেই সিদ্ধান্ত তিনি বদল করেন কি না, সেটাই দেখার। বৃহস্পতিবার থেকে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিসে কাজকর্ম শুরু হয়ে গিয়েছিল। সব ঠিকঠাক থাকলে, আজ থেকেই ফের ভরতি প্রক্রিয়াও চালু হতে পারে। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
[আরও পড়ুন: রাজনৈতিক মতবিরোধ নাকি অন্য কিছু? মালদহে TMC নেতা ‘খুনে’র কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা]
প্রায় সপ্তাহ খানেক ধরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রবিক্ষোভের জেরে অশান্ত পরিস্থিতি। গত শুক্রবার থেকে ছাত্র আন্দোলনে গৃহবন্দি উপাচার্য (VC) বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, উপাচার্য অ্যাডমিশন কমিটির চেয়ারম্যান। তাই তিনি অফিসে না আসার কারণে ছাত্রছাত্রীদের ভরতি প্রক্রিয়া (Admission process) বন্ধ করে দেওয়া হল। এছাড়া বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ে নড়েচড়ে বসে শিক্ষামন্ত্রক। কেন্দ্রের তরফে নোটিস পাঠিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়, এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বন্ধ রাখা যাবে না। বিশেষত ভরতি প্রক্রিয়া এবং পরীক্ষার ফলপ্রকাশ করতেই হবে। তারপর কর্তৃপক্ষও সেন্ট্রাল অফিস খুলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উদ্যোগী হয়।
[আরও পড়ুন: Post Poll Violence: রাজ্যের তৈরি SIT-কে তদন্তে সাহায্যের জন্য আরও ১০ অফিসার নিয়োগ]
এরই মাঝে বৃহস্পতিবার সন্ধের দিকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানা যায়। তাঁর বাড়িতে ডাক্তারকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ আন্দোলনকারী ছাত্রদের বিরুদ্ধে। তবে রাতের দিকে স্বাস্থ্যদপ্তরের তরফে এক চিকিৎসকের টিম পাঠানো হয়। কিন্তু তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই প্রতিনিধিদল জানিয়েছে, উপাচার্যের মেয়ে তাঁদের বলেন, ”বাবা ঠিক আছেন, চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।” এতেই সন্দেহ দানা বাঁধে। রাতের দিকে জেলার এসপি খোঁজ নেন উপাচার্যের। তবে তাঁর এই আচরণে প্রশ্ন উঠছে, অসুস্থ হলে কেনই বা রাজ্যের পাঠানো চিকিৎসকদলের কাছে চিকিৎসা করাতে অস্বীকার করলেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী?
এসবের মাঝেই আশার আলো দেখছেন পড়ুয়াদের একাংশ। হয়ত আজ থেকেই থমকে থাকা ভরতি প্রক্রিয়া চালু হয়ে যেতে পারে। সেমিস্টার-সহ অন্যান্য পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার দিনক্ষণও জানানো হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। এদিকে, আজই হাই কোর্টে বিশ্বভারতী মামলার শুনানি হওয়ার কথা।