নন্দন দত্ত, বোলপুর: প্রায় দশঘণ্টা পর ঘেরাওমুক্ত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। বুধবার রাত আড়াইটে নাগাদ নিজের কার্যালয় থেকে বেরন তিনি। আন্দোলনকারীদের সামনে দিয়ে উপাচার্যকে নিজের বাসভবনে পৌঁছে দিতে কিছুটা বেগ পেতে হয় নিরাপত্তারক্ষীদের। পড়ুয়াদের সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীরা আরও একপ্রস্থ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে নিজের বাসভবনেই রয়েছেন উপাচার্য। তাঁর বাসভবনের সামনে চলছে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ অবস্থান। যেকোনও রকমের বড়সড় অশান্তি এড়াতে উপাচার্যের বাসভবনের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) পড়ুয়াদের অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন উপাচার্য। যাকে খুশি তাকে সাসপেন্ড করা, শোকজ করা, বদলি করা, কোনও কর্মীর বেতন বন্ধ করে দেওয়া যেন রোজনামচায় পরিণত করেছেন। বাদ যাননি পড়ুয়ারাও। উপাচার্যের রোষের শিকার হয়েছেন তাঁরাও। কাউকে হস্টেল থেক বহিষ্কার, তো কাউকে সাসপেন্ড করে শিক্ষাঙ্গন থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। এই অভিযোগে বুধবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে হাতাহাতিতেও জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারীরা।
[আরও পড়ুন: অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় শিক্ষা সচিবের হাজিরার নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ, ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য]
উপাচার্যের নির্দেশে নিরাপত্তারক্ষীরা পড়ুয়াদের দিকে কার্যত ধেয়ে আসেন। পড়ুয়ারাও তাদের দাবি জানাতে নাছোড়বান্দা। উপাচার্য নিরাপত্তারক্ষীদের পড়ুয়াদের উপর ‘গুলি চালানো’রও নিদান দেন বলেই অভিযোগ। এরপর পড়ুয়ারা আরও রেগে যান। উপাচার্যকে ঘিরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের আরও অভিযোগ, পড়ুয়াদের অবস্থান হঠাতে উপাচার্য বহিরাগতদের কাজে লাগান। যা ঘিরে দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ, হাতাহাতি হয়। তাতে চোট পান দুই পড়ুয়া।
টানা দশ ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে থাকার পর নিজের অফিস থেকে বেরিয়ে আসেন উপাচার্য। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে তাতে তাঁরা শান্ত হননি। তাই নিরাপত্তারক্ষীরা জোর করে বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেন। নিজের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে পড়েন উপাচার্য। বাসভবনে পৌঁছন তিনি। বর্তমানে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনে শামিল পড়ুয়ারা।