ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: তিন পড়ুয়াকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত খারিজের দাবি। রিলে অনশনের (Relay Hunger Strike) সিদ্ধান্ত আন্দোলনকারী পড়ুয়া এবং অধ্যাপকদের। রবিবার দুপুর থেকে অনশন শুরু করেন সংগীত ভবনের বহিষ্কৃত ছাত্রী রূপা চক্রবর্তী এবং অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। উপাচার্যের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে সরব বিশ্বভারতীর অর্থনীতি এবং রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য। তিনি জানান, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী যখন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন, তখন তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। পরবর্তী সময়ে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে ৩ বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দ্বায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। সেই ব্যক্তি কীভাবে বিশ্বভারতীর উপাচার্য হলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক। তাঁর আরও অভিযোগ, উপাচার্য দুর্নীতি করছেন। যাঁরা মুখ খুলছেন তাঁদের সাসপেন্ড এবং বহিষ্কার করা হচ্ছে। তারই প্রতিবাদে সত্যাগ্রহ ও অনশনের সিদ্ধান্ত।
এদিকে, শিক্ষক দিবসে উপাচার্যকে সম্মান জানাতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা পুষ্পস্তবক এবং মিষ্টি নিয়ে তাঁর বাসভবনের সামনে যান। উপাচার্যের বাসভবনের দরজায় থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের মাধ্যমে ফুল এবং মিষ্টি উপাচার্যের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আরজি জানান তাঁরা। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা তা নিতে অস্বীকার করেন। আন্দোলনরত ওই পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখাই করলেন না উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty)।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর প্রায় ১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও অর্থনীতি এবং সংগীত বিভাগের মোট ৩ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাসপেনশন বর্ধিত করা হয়। তারা সাসপেন্ড থাকাকালীন তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব পড়ুয়ারা। তার জেরে আন্দোলন এখনও চলছে।
[আরও পড়ুন: বিয়ের আতঙ্কে ঘর ছেড়েছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক, ঘরে ফেরাল হ্যাম রেডিও]
তবে ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন নিরাপত্তার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। রিট পিটিশন দাখিল করা হয়। গত শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট কড়া অবস্থান নেয়। জানিয়ে দেওয়া হয় ক্যাম্পাসের ৫০ মিটারের মধ্যেও কোনও বিক্ষোভ চলবে না। শান্তিপূর্ণ অবস্থান চলতে পারে, তবে চলবে না মাইক বাজিয়ে স্লোগান দেওয়া। তারপরই হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে উঠে যায় অবস্থান।
শুক্রবার রাতে হাই কোর্টের নির্দেশ মতো উপাচার্যের বাড়ির ৫০ মিটার ছেড়ে ফের অবস্থানে বসেন পড়ুয়ারা। ক্যাম্পাস থেকে ৫০ মিটার ছেড়ে জমায়েত করেন পড়ুয়াদের একাংশ। তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ। নেই মাইকের ব্যবহারও। সেই অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন বেশ কয়েকজন অধ্যাপকও। তবে তারই মাঝে বিশ্বভারতীতে শুরু হয়েছে ভরতি প্রক্রিয়া।
দেখুন ভিডিও: