সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনে ক্রিসমাস। তাই ইউক্রেন যুদ্ধে (Russia-Ukrain war) সাময়িক বিরতি ঘোষণা করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। ক্রেমলিন সূত্রে খবর, জানুয়ারির ৬ ও ৭ তারিখ সেখানে অর্থোডক্স ক্রিসমাস। তাই ওই দু’দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি (Ceasefire) ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, রাশিয়ায় এই সময়েই ক্রিসমাস (Orthodoc Christmas)পালিত হয়। তা ভালভাবে পালনের জন্য সেখানকার ধর্মীয় নেতা প্রেসিডেন্টের কাছে সাময়িক যুদ্ধবিরতির আবেদন জানান। সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে সপ্তাহান্তে রাশিয়া যুদ্ধে না জড়ানোর ঘোষণা করল।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। বিশ্বজুড়ে নিন্দার মধ্যেও ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে গিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উপায় থাকলেও সামরিক আগ্রাসনের নীতি থেকে সরে আসেননি রুশ প্রেসিডেন্ট। দীর্ঘদিন পরে অবশ্য তাঁর মুখে উলটো সুর শোনা গিয়েছিল। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তায়িপ এর্ডোয়ানকে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান তিনি। তবে তার জন্য কঠিন শর্ত রেখেছেন পুতিন।
বৃহস্পতিবার তুরস্ক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন পুতিন। তারপরেই ক্রেমলিনের তরফে বিবৃতি জারি করা হয়। “বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি রুশ প্রেসিডেন্ট। তবে তার আগে, ইউক্রেনের যে অঞ্চলগুলি রাশিয়া নিজের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করেছে তাকে মান্যতা দিতে হবে”, এই বার্তা দেওয়া হয়েছে রুশ প্রশাসনের তরফে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ইউক্রেনকে অস্ত্র ও অন্যান্য সামরিক সাহায্যের মাধ্যমে আসলে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করছে পশ্চিমি দুনিয়া। অন্যদিকে, তুরস্ক প্রেসিডেন্টের দপ্তরের তরফেও জানানো হয়, পুতিনকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা দিয়েছেন এর্ডোয়ান।
[আরও পড়ুন: ‘মেগানকে কুকথা বলে কলার ধরে মাটিতে ফেলে দেয় উইলিয়াম’, বিস্ফোরক রাজকুমার হ্যারি]
প্রসঙ্গত, সেপ্টেম্বর মাসেই পুতিন ঘোষণা করেছিলেন দোনবাস-সহ চারটি প্রদেশ রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত হল। এই ঘোষণার কিছুদিন আগেই ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে গণভোট করিয়েছিল রাশিয়া (Russia-Ukraine War)। সেখানে বিপুল জয় পেয়েছে বলে দাবি করেছিল ক্রেমলিন। পুতিনের বক্তৃতার পরে সেই দাবিতে সিলমোহর পড়ল বলেই ধরে নিয়েছিল রাশিয়া। তবে রাশিয়ার এই দাবিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। পুতিন বলেছিলেন, “গণভোটের মাধ্যমে ডোনেৎস্ক, লুহান্সক, খারসন, জাপরজাই-এই চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করলাম।”
তবে সঙ্গে সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংস্থার প্রধান উরুসুলা ভন দের লেয়েন রাশিয়ার এই পদক্ষেপকে বেআইনি বলে অভিহিত করেন। একটি টুইট করে তিনি লেখেন, “বেআইনিভাবে চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্ত করেছেন পুতিন। কিন্তু তাতে কিছুই লাভ হবে না। ওই জায়গাগুলি ইউক্রেনের অংশ এবং চিরদিন সার্বভৌম ইউক্রেন রাষ্ট্রেরই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। ইউক্রেনের তরফেও বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করেই গণভোট করিয়েছে রাশিয়া। তাই এই ভোটের ফলাফলের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। দোনবাস অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের বিবাদের জেরেই শুরু হয়েছিল বিধ্বংসী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। রুশ অধিগ্রহণ মেনে নিলেই আলোচনায় বসবেন বলে জানিয়েছেন পুতিন।